মির্জা নাদিম :
জুলাইয়ের শুরু দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শুরুর দিকে সারা বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলমান ছিল।
পরবর্তীতে ১৪ জুলাই থেকে সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠন এবং পুলিশ আন্দোলন বন্ধ করতে দমন নিপীড়ন শুরু করলে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
সারাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করে তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা’র শিক্ষার্থীরা ১৬ জুলাই থেকে ঝাপিয়ে পড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে। গত ১৮ জুলাই তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা টঙ্গী’র সাবেক শিক্ষার্থী সাকিল পারভেজ উত্তরা বিএনএস নামক স্হানে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করলে আনুমানিক বিকাল ৪:০০ টায় অতর্কিত ভাবে পুলিশের গুলিতে আহত হয়। পরবর্তীতে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহাদাত বরণ করেন। তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা’র প্রথম শহীদ সাকিল পারভেজ।
সারাদেশে আন্দোলন চলমান সকল অফিস আদালত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব কিছু বন্ধ করে দেয় সরকার। তবুও আন্দোলন থেমে নেই। গত ১৯ শে জুলাই জুমার নামাজের পর তা’মীরুল মিল্লাত টঙ্গী থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হতে হয়।পরবর্তীতে ২০ শে জুলাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা টঙ্গী’র শিক্ষার্থীরাসহ বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত শ্রমিক জনতার অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে শুরু হয় গাজীপুরা সাতাইশ থেকে এরশাদ নগর এলাকা পর্যন্ত কঠোর অবরোধ। আন্দোলনের শুরুর দিকে পুলিশ আত্মসমর্পণ করলেও বিকাল তিনটা থেকে ছাত্রলীগ দফায় দফায় অতর্কিত হামলা চালায়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ এবং পুলিশের যৌথ হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে সড়কে পড়ে যায় মুহাম্মদ নাসির ইসলাম। পরবর্তীতে তাকে কুর্মিটোলা হসপিটালে নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়াও ছাত্রলীগ এবং পুলিশের গুলিতে তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা টঙ্গী’র অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হয়। এখনো অসংখ্য জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন বলে জানিয়েছেন তা’মীরুল মিল্লাত কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের ভিপি আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ। তিনি আর বলেন নৈতিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সব সময় তা’মীরুল মিল্লাতের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেওয়ায় অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মিল্লাতের শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন স্হানে আন্দোলন চালিয়ে গেছে। অসংখ্য জেলায় উপজেলায় তা’মীরুল মিল্লাতের সাবেক বর্তমান শিক্ষার্থী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত তা’মীরুল মিল্লাত যাত্রাবাড়ী এবং টঙ্গী শাখার শহীদ সংখ্যা ৫ জন। তা’মীরুল মিল্লাত টঙ্গী শাখা’র সাবেক শিক্ষার্থী শহীদ সাকিল পারভেজ ,বর্তমান শিক্ষার্থী শহীদ নাসির ইসলাম ,সাবেক শিক্ষার্থী শহীদ ওসমান পাটোয়ারী তাছাড়া যাত্রাবাড়ী শাখার শহীদ মুহাম্মদ আদিল এবং শহীদ মুনতাসির রহমান আলিফ।
তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা টঙ্গী’র বর্তমান শিক্ষার্থী ছিল শহীদ নাসির ইসলাম। শহীদ নাসির ইসলাম তা’মীরুল মিল্লাত টঙ্গী ক্যাম্পাস থেকে একটু সামনে এশিয়া পাম্পের সামনে আন্দোলনরত অবস্থায় স্পটে শাহাদাত বরণ করেন।শহীদ নাসির ইসলাম দেশের জন্য বিনাস্বার্থে এভাবে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দেওয়ায় তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা টঙ্গী’র পকেট গেটের নতুন নামকরণ করা হয় শহীদ নাসির গেট।