ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
জ্বীনের সোনা হাড়ি পেয়ে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর ব্যাপার। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে গভীর রাত পর্যন্ত ইট ভাটার মাটি খুঁড়ছেন সাধারণ মানুষ। নানান বয়সের হাজারো মানুষ যখন রাত-দিন সমান করে স্বর্ণের লোভে মাটি খুঁড়ে দেশে আলোড়ণ সৃষ্টি করেছে। ঠিক তখনেই স্বর্ণের পাহাড়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারির ঘোষণা আসে। মুহূর্তেই পুরো এলাকায় ঘিরে দেওয়া হয় লাল চিহ্নের ফ্লাগ দিয়ে। সরিয়ে দেওয়া হয় মানুষকে।
শনিবার (২৫) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ঠাকুরগাঁও রানীশংকৈল উপজেলার কাতিহার আরবিবি ইট ভাটার চারপাশে ১৪৪ ধারা জারি করে একটি প্রজ্ঞাপন দেন প্রশাসন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রানীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের কাতিহার রাজোর গ্রামের মো: রুহুল আমিনের মালিকানাধীন আরবিবি ইট ভাটায় মাটির স্তুপ খুড়ে সোনা পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় লোকজন বেশ কয়েক দিন যাবৎ খুন্তি, কোদাল, বাশিলা দিয়ে মাটি খুড়াখুড়ি করে প্রতিদিন সোনার সন্ধান করছে। এতে আগ্রাসী লোকজন স্বর্ণ পাওয়ার আশায় ঝগড়া-বিবাদ করছে ও দ্বন্দ্বে লিপ্ত হচ্ছে। প্রতিদিন মাটি খুড়ে স্বর্ণের সন্ধান করতে থাকলে যেকোন সময় ঘটনাস্থলে মারামারি, খুন, জখমসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জুডিশিয়াল মুন্সীখানা শাখা থেকে উক্ত স্থানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: রকিবুল হাসান ইট ভাটা এলাকা ও এর আশপাশে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৪৪ ধারা জারি করেন।
১৪৪ ধারা জারির পর থেকেই স্বর্ণের সন্ধানে আসা মানুষেরা তাড়াহুড়ো করে এলাকা ছাড়েন। মুহূর্তেই পুলিশ পুরো এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে নেন। বর্তমানে জনশূন্য ইটভাটার আশেপাশ।
গেল এপ্রিলে হঠাৎ স্থানীয় এক ব্যক্তি তার ফেইসবুকে লিখেন আরবিবি নামে একটি ইটভাটায় ইট প্রস্তুতের জন্য সংরক্ষিত মাটি খুড়লেই মিলছে সোনা। এমন খবরে স্বর্ণের লোভে
হাতে কোদাল, খুন্তি ও বশিলা নিয়ে মাটির খুড়ার প্রতিযোগীতায় নামে স্থানীয়রাসহ উৎসুক জনতা।
এ বিষয়ে রাণীশংকৈল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান জানান, মাস খানিক ধরে মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়ে মাটি খুড়তে থাকে । যেহেতু সেখানে মাটি খোড়ার কোদাল, খন্তি সরঞ্জামাদি নিয়ে দলবদ্ধ হচ্ছে। সে কারণে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ইট ভাটার আশপাশ এলাকা ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।