রোকনুজ্জামান সবুজ জামালপুরঃ
জামালপুর জেলায় জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১২ টি প্রকল্পে ৩৫০ কোটি টাকা বরাদ্ধের উন্নয়নের কাজ দৃশ্যমান হওয়ায় অনেকটাই বদলে যাচ্ছে জামালপুরের চিত্র। চলমান বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শেষ হলে অবহেলিত এ জেলার মানুষের দুর্ভোগ অনেকটাই কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে এ জেলায় উন্নয়ন কল্পে অনেক প্রকল্পই হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ। তিনি ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর জামালপুর জেলায় যোগদান করেন। এরপর থেকেই এ জেলায় উন্নয়নের কাজগুলো দ্রুতই এগিয়ে যাচ্ছে বলে অনেকেই জনান।
জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছর থেকে চলমান অর্থ বছর পর্যন্ত সমগ্রদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পে জামালপুর জেলায় সাবমারসিবল পাম্পযুক্ত গভীর নলকূপ ১৫৬০ টি ও অগভীর নলকুপ ৯৬২ টি এবং কমিউনিটি বেউজড ওয়াটার সাপ্লাই স্কিম ৩২৯ টি ৮৩ কোটি ৪৪ লক্ষ ৭৮ হাজার, মুজিব শতবর্ষে ভূমিহীন, গৃহহীনদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্পের পানি সরবরাহ প্রকল্পের কয়েটি উপজেলায় ৬৩৯ টি অগভীর নলকূপে ৩ কোটি ৩৫ লক্ষ ২৪ হাজার জিপিএস উন্নয়ন প্রকল্পের ১০৭ টি ওয়াশ ব্লক নির্মাণে ১৭ কোটি ৩৮ লাখ ৭৫ হাজার ও ১৬১ টি পানির উৎস স্থাপনে ২ কোটি ৯৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা,এনএনসিপিএস উন্নয়ন প্রকল্পের ৯২ টি ওয়াশ ব্লক নির্মাণ ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৫৪ হাজার ও ১৬১ টি পানির উৎস স্থাপন এ ২ কোটি ৯৭ লক্ষ ৯৫ হাজার,পিইডিপি উনন্নয়ন প্রকল্পের ৪৮৪ টি ওয়াশ ব্লকে ৮৪ কোটি ৭০ লাখ ও ৮০০ টি পানির উৎস স্থাপনে ১৫ কোটি ৬৮ লক্ষ,রাজস্ব বাজেটের আওতায় পাম্পযুক্ত অগভীর নলকূপে ৪৭ হাজার,পানির গুনগত মান পরীক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের ১ টি ল্যাবরেটরী ভবন নির্মাণ কাজে ৫৩ লাখ ৭৮ হাজার,মানব সম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ,স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি শীর্ষক প্রকল্পের ১৬ টি হ্যান্ড ওয়াশি ষ্টেশন ও ৩৬ টি স্যানিটেশন হাজিন ফেসিলিটিস এবং ২৮ টি সাবমাসে ১০ কোটি ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার, ৯৬টি কমিউনিটি বেইজ ওয়াটার সাপ্লাই স্কিম ১৬ কোটি ৭১ লাখ ৫৯ হাজার, ৩১ টি মূল পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই স্কিমে ৫ কোটি ৫১ লাখ, সরিষাবাড়ী, মাদারগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলায় ৪টি লার্জ পাইপম ওয়াটার সাপ্লাই স্কিমে ২৪ কোটি ৮৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়।
এ ছাড়াও ৩২ টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনা সহ এনভায়রনমেন্টাল স্যানিটেশন প্রকল্পে ২ টি উৎপাদক নলকূপ এটি এক্সপ্লোরেটরী ড্রিলিং পরীক্ষামুলক নলকূপ, ২টি পাম্প হাউজ ও ২ টি সাবমারসিবল পাম্প খননে ৮৫ লাখ, ৩২ কি: মি: পাইপ লাইন স্থাপন কাজে ও ৭৭ লাখ ৯২ হাজার, ১.৫ কি মি আর সিসি ড্রেইন নির্মাণে ১ কোটি ৪ লাখ ৪৮ হাজার, ১টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এবং ট্রান্সমিশন পাইপ লাইন স্থাপন কাজে ৫ কোটি ৯১ লাখ ১৪ হাজার, ১ টি ফিক্যাল স্নাজ এবং সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট নির্মাণ কাজে ৭ কোটি চার লাখ ৮৫ হাজার, ৪ টি পাবলিক টয়লেট ও ১২ টি কমিউনিটি টয়লেট এবং ২৫ টি কমিউনিটি বিন স্থাপনে ৫৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ব্যায়ে উন্নয়ন কাজ করা হয়। এদিকে জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্পে ৪ টি পরীক্ষা মুলক নলকূপ স্থাপনে ৩ লাখ ৮ হাজার, ২ টি উৎপাদক নলকূপ ও৪ টি পরীক্ষামূলক নলকূপ এবং ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল সহ পাম্প হাউজ নির্মাণে ১ কোটি ৩৪ লাখ, ৩০০০ ঘনমিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ভূ-গর্ভস্থ জলাধার নির্মাণে ৫ কোটি ৬৫ লাখ ৫ হাজার, ৮ টি পরীক্ষামুলক নলকূপ, ৪ টি উৎপাদক নলকূপ, ৪ টি পাম্প হাউজ, ৪ টি বাউন্ডারী ওয়াল, ৪ টি সাবমারসিবল পাম্প সহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি কাজে ২ কোটি ৫৫ লাখ ৪৮ হাজার, ২.৪ কিমি ট্রান্সমিশন পাইপ লাইন স্থাপনে ১ কোটি ৩২ লাখ ৫ হাজার, ৬,২ কিমি সারফেস ড্রেন নির্মাণ কাজে ১০ কোটি ৯০ লাখ ১৮ হাজার, ১ টি সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ কাজে ২১ কোটি ২৮ লাখ ৫২ হাজার, ৪০০ মি সারফেয ড্রেন ওয়ালকওয়ে নির্মাণে ১ কোটি ১১ লাখ টাকার কাজ চলমান রয়েছে। অন্যদিকে ৩০ টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যাবিটেশন প্রকল্পে ইসলামপুরে ড্রেন ও নলকূপ স্থাপনে ৯ কোটি ৭৫ লাখ ২৮ হাজার, ৩ টি পরীক্ষা মুলক নলকূপ, উতপাদক নলকূপ এবং ৩ টি পাম্প হাউজ নির্মাণে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৭ হাজার, ইঞ্জিনিয়ার অফিসে ২১ লাখ ৪১ হাজার, ৩ টি পাবলিক টয়লেট, ১ টি ফিক্যাল স্ল্যাজ ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্ট ২ কোটি ২৭ লাখ ২২ হাজার, ৯৮২ টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণে ৬ কোটি ৯০ লাখ ৩৪ হাজার, ইসলামপুর পৌরসভা প্ল্যান্টে ২ কোটি ১০ লাখ ৩১ হাজার টাকার কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও বাংলাদেশের ১০ টি অগ্রাধিকার ভিত্তিক শহরে সমন্বিত স্যানিটেশন ও হাইজিন প্রকল্পে ৬ টি পানির উৎস ও ১৫০ টি হাউজ হোল্ড কানেকশন এবং ২৪ টি স্ট্রিট হাইড্রেন্ট এ ২৩ লাখ ৭৯ হাজার, ৫ টি কমিউনিটি ল্যাট্রিনের ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার কাজ চলমান রয়েছে।
এদিকে জামালপুর জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এডমিন মোঃ জাহাঙ্গীর কবীর জানান, সুলতান স্যারের যোগদানের পর ১২ টি প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৫০ কোটি টাকার উন্নয়ন অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কয়েকটি প্যাকেজের কাজ ৫৭% হয়ে আছে যেগুলো সম্পূর্ন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এ সকল প্রকল্প বাস্তবায়নে জামালপুর জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সুলতান মাহমুদ স্যারের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় জামালপুরে সকল উন্নয়ন মুলক কাজ যথাযথ ভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে জামালপুর জেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সুলতান মাহমুদ এই প্রতিবেদকে জানান, চলমান প্রকল্পগুলো এখনো শেষ হয়নি সেগুলো এখনো বিল দেওয়া হয়নি। কাজ শেষ হওয়ার পর বিল প্রদান করা হবে। সামনে আরো কিছু প্রকল্পের কাজ আসবে।
আমরা কোনো প্রকার অনিয়মের পক্ষপাতিত্ব করি না বা অনিয়মকে প্রশ্রয় দেই না এবং দেবোও না।