স্টাফ রিপোর্টার ছাতকঃ
ছাতকে ব্র্যাকের এক স্বাস্থ্যকর্মী নারীকে উত্যক্ত করে কু-প্রস্তাব দেয়ায় অভিযোগে বখাটেকে জুতা পেটা দিয়ে আত্মরক্ষা করেন ওই নারী। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ৬ নভেম্বর বুধবার বিকেলে উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নের মুক্তারপুর গ্রামে।
জানা যায়, উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ ব্র্যাক অফিসের দোলারবাজার ইউনিয়নের সুপারভাইজার (স্বাস্থ্য) ও মুক্তারপুর গ্রামের জনৈকের স্ত্রী এবং চার সন্তানের জননী ৬ নভেম্বর দিনব্যাপী অফিসের কাজে ফিল্ডে দায়িত্ব পালন শেষে সিএনজি-অটো-রিকশা যোগে বাড়ি ফিরছিলেন। সন্ধ্যার আগে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেটে প্রতিদিনের মতো ওইদিনও সে গ্রামের রাস্তা দিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে মাজার এলাকায় পৌঁছা মাত্র পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা একই গ্রামের মৃত কচির আলীর বখাটে পুত্র আবদুল হাই তাকে পথ আগলে উত্যক্ত করে কু-প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হলে এসিড ঢেলে তার মুখসহ শরির জলসে দিবে বলেও হুমখি দেয়। এসময় ব্র্যাকের এ নারী কর্মী বখাটেকে জুতা পেটা দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে বাড়িতে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন। মুহুর্তের মধ্যে গ্রামে এ বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে এবং আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে বখাটে নির্লজ্জভাবে গ্রামের এক শ্রেনি কু-চক্রি মহলকে নিয়ে মামুনের বাড়িতে বৈঠকে বসে নারী কর্মীর বিরুদ্ধে উল্টো বিভিন্ন মিথ্যা অপবাদ তুলে নতূন করে ষড়যন্ত্রের জাল বুনে। বৈঠকে বখাটের পক্ষ নিয়ে গ্রামের ওই কু-চক্রি মহলরা নারী কর্মীর বিরুদ্ধে বখাটের কথামতো একটি সাদা কাগজে নামে-বেনামে স্বাক্ষর সংগ্রহ করে।
অভিযোগ উঠেছে, নির্যাতিত গরিব ওই নারীর পক্ষে কোন কথা না বলে উল্টো বখাটের পক্ষ নিয়েছে ওই স্বার্থান্বেষি মহল। এতে পরিবারের সদস্যদের মান-সম্মান ও নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন ওই ব্র্যাকের নারী কর্মী। এ বিষয়ে বখাটে ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন এ নারী। পরে বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান শায়েস্তা মিয়ার মাধ্যমে সুষ্ঠ ভাবে নিস্পত্তি করে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে তাকে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী আ’লীগ নেতা আওলাদ আলী রেজাসহ থানায় উপস্থিত অন্যান্য গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা। এ ব্যাপারে নির্যাতিত গোবিন্দগঞ্জ ব্র্যাকের দোলারবাজার ইউপি সুপারভাইজার (স্বাস্থ্য) অভিযোগ করে বলেন, মুক্তারপুর গ্রামের মৃত আবদুল গফুরের পুত্র আবদুল মজিদ ওরফে কালা রাজা এবং মৃত আবদুর রউফের পুত্র সিএনজি অটো-রিকশা চালক আনোয়ার হোসেনের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে তাকে বিভিন্ন ভাবে উত্যক্ত করে এবং কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছে বখাটে আবদুল হাই। তার কথায় রাজি না হলে এসিড ঢেলে মুখসহ শরির জলসে দেয়ার হুমকিও দেয়। ৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে ওই উত্যক্তকারি বখাটে ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন কিন্তু থানা থেকে আ’লীগ নেতা আওলাদ আলী রেজা, ইউপি চেয়ারম্যান শায়েস্তা মিয়ার মাধ্যমে স্থানীয় ভাবে বিষয়টি সুষ্ঠভাবে দেখে দেয়া হবে এমন আশ্বাসে তিনি বাড়িতে চলে যান। কিন্তু ঘটনার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও ইউপি চেয়ারম্যান শায়েস্তা মিয়া বিষয়টি দেখে দিচ্ছেন না। এতে তিনি ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। বখাটে ও তার সহযোগিদের দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তি দেয়া না হলে আত্মহত্যা করবেন বলে ব্র্যাকের এ নির্যাতিত নারী কর্মী হুশিয়ার করেন। এ ব্যাপারে দোলারবাজার ইউপি চেয়ারম্যান শায়েস্তা মিয়া প্রতিবেদককে পত্রিকায় সংবাদ না দেয়ার জন্য অনুরোধ করে বখাটে আবদুল হাইকে জুতাপেটার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, এটি সত্য নয়। তবে দু’পক্ষকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে এনে দু’তিন দিনের মধ্যে বিষয়টি নিস্পত্তি করে দিবেন।