স্টাফ রিপোর্টারঃ
সুনামগঞ্জের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কুস্তি খেলাকে ঘিরে এবার দানা বেঁধেছে নতুন বিতর্ক ও গণআন্দোলনের সুর। ‘কুস্তি ফেডারেশন’ নামক সংগঠনের সভাপতির পদে বিগত ছয় বছর ধরে বহাল থাকা নুরুল হক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে একচেটিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার ও অস্বচ্ছ অর্থনৈতিক লেনদেনের।
শনিবার (১২ জুলাই ২০২৫) জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের বিছনা গ্রামের মাঠে হাজারো ক্রীড়াপ্রেমী মানুষের উপস্থিতিতে এক বিশাল কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়। প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে আয়োজিত সমাবেশে সুনামগঞ্জ কুস্তি এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা দাবি তোলেন, “নুরুল হকের একনায়কতান্ত্রিক মনোভাব, গণমাধ্যমে বাধা প্রদান এবং প্রতি টিম থেকে ৩০০০ টাকা করে আদায়ের নামে অর্থনৈতিক দুর্নীতি কুস্তির ঐতিহ্যকে কলঙ্কিত করছে।”
এ সময় বক্তারা বলেন, “আমরা গর্ব করি আমাদের পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া কুস্তি ঐতিহ্য নিয়ে। কিন্তু আজ তা নষ্ট করার অপচেষ্টা চলছে। কুস্তি এসোসিয়েশনকে রাজনৈতিকভাবে ডাইভার্ট করা হচ্ছে, যা মেনে নেওয়া যায় না।”
একই অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী কুস্তি ম্যাচ-বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের সংগ্রামপুর পঞ্চগ্রাম বনাম বিছনা পঞ্চগ্রামের মধ্যকার। খেলা শুরু হয় দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে এবং শেষ হয় বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে। ম্যাচ পরিচালনা করেন তিনজন নিরপেক্ষ আম্পায়ার: আজির উদ্দিন (মাগুরা), রইস উদ্দিন (শ্রীপুর), ও সাইফুল ইসলাম (নোয়াগাঁও)। সমঝোতার ভিত্তিতে উভয় দলের মধ্যে পাঁচ দাগা নির্ধারণ করে খেলা সম্পন্ন হয়।
উপস্থিত বিশিষ্টজনদের মধ্যে ছিলেন কবি মো. সহিদ মিয়া, আবুল কাসেম (সুকদেবপুর), জমির উদ্দিন (শ্রীপুর), গরীব উল্লাহ নরুল্লাহ, আলী আহমদ (সুজাতপুর), মজনদার (নুরপুর), শামসুল আলম (ঘাগটিয়া), সাদক আলী (সেলমত্তপুর), আজির উদ্দিন (মাগুরা), বাতির মিয়া (বিছনা), আব্দুল্লাহ (সংগ্রাম), মিজানুর রহমান মেম্বার (কাটালিয়া), আনোয়ার মেম্বার (বিছনা) এবং বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ (ফতেপুর)।
বক্তারা জানান, আগামী সপ্তাহে এসোসিয়েশনের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভায় জেলার আরও ১২টি কুস্তি দল অংশগ্রহণ করবে, যেখানে নুরুল হক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ নিয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।