কাপাসিয়া (গাজীপুর) থেকে শামসুল হুদা লিটনঃ
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সর্বশেষ চুড়ান্ত তালিকা থেকে বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধারা ২২ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধারা যাচাই-বাছাই কমিটির বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি ও অর্থের বিনিময়ে চুড়ান্ত তালিকায় অর্ন্তভূক্তির অভিযোগ করেছেন।
সদর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সস্মেলনে লালমুক্তিবার্তা প্রাপ্ত ও গেজেটভূক্ত মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মফিজ উদ্দিন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এতে বলা হয়েছে, পরিপত্রঅনুযায়ি সর্বশেষ যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি হবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, যদি তিনি মুক্তিযোদ্ধা হন। তা না হলে সাবেক সংসদ সদস্য। অথচ সাবেক দুইজন সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার পরও জামানত হারানো সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাহমুদুল আলম খান বেনু’কে সভাপতি করে কমিটি গঠন করা হয়। নির্বাচনের সময় তার পক্ষে কাজ না করার কারনে ক্ষুব্দ হয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন নিজ গ্রুপের অনেককেই তিনি ‘না’ তালিকাভূক্ত করেছেন। ভারতীয় তালিকাভূক্ত এবং লালমুক্তিবার্তা ভূক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে যাচাই-বাছাই কমিটি করার কথা থাকলেও তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়। কাপাসিয়ার ক্ষেত্রে এককভাবে গেজেটভূক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি অনিয়মতান্ত্রিক ও মনগড়াভাবে যাচাই-বাছাই নির্দেশিকা ২০১৬ অমান্য করে ক, খ, গ বা ‘হ্যা’, ‘না’ তালিকা প্রনয়ন করেন। বক্তারা বলেন, ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মোঃ শামসুজ্জামানের গ্রুপের (লালমিয়া) লালমুক্তিবার্তা অন্তর্ভূক্ত ৩৫ জনের মধ্যে ১ জন, গেজেটভূক্ত ৪০ জনের মধ্যে ১৬ জন এবং অনলাইনে আবেদিত ৩০ জনের মধ্যে ১৫ জনকে ‘না’ তালিকাভূক্ত করেছেন। এছাড়া অন্যান্য গ্রুপের লালমুক্তিবার্তা প্রাপ্ত ৫ জনসহ সেনাবাহিনী ও বিএলএফ’র কিছু সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধাকে ‘না’ তালিকাভূক্ত করেছেন। বর্তমানে ৮৩ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা গত জুলাই মাস থেকে বন্ধ রয়েছে। ফলে দরিদ্র, অসুস্থ্য ও অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধারা নির্দিষ্ট সময় ১৫ দিনের মধ্যে আপীল আবেদন করলেও এবিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ি কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তা আমলে নিয়ে নিস্পত্তি করার কথা বলা হলেও নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে কোন অভিযোগ ছিল না। অথচ পরবর্তীতে গঠিত বিতর্কিত যাচাই-বাছাই কমিটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদ দিয়ে চুড়ান্ত তালিকা প্রনয়ন করেছেন।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট ‘গ্রুপ ভিত্তিক উন্মুক্তভাবে’ যাচাই-বাছাই কার্যক্রম পরিচালনা করলে সঠিক তালিকা প্রনয়ন করা সম্ভব বলে তাদের দাবী। এ সময় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সামসুদ্দিন খান, ইফাজ উদ্দিন, মোঃ সালাউদ্দিন মজনু, সুলতান উদ্দিন সরকার, আব্দুল বাতেন প্রমূখ। পরে তারা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের সামনে সদর রাস্তায় মানববন্ধন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।