রোকনুজ্জামান সবুজ, জামালপুর ঃ
জামালপুরে ইসলামপুরের তারতাপাড়া গ্রামের প্রয়াত আব্দুল কাদেরের সৌদিতে দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত ক্ষতিপুরণের ৩২ লাখ টাকা আত্নসাৎ প্রসঙ্গে স্থানীয় দুপক্ষের দ্বন্দ্ব-কলহ চরমে পৌছে গেছে। এছাড়াও তারতাপাড়া গ্রামের একটি বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় ওই গ্রামের সবুজ আকন্দকে চাকুরী দেওয়ার প্রলভনে মাদ্রাসা সুপারের নেওয়া ৫লক্ষ টাকা আতœসাত প্রসঙ্গেও চলছে দ্বন্দ্ব-কলহ ও পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, ইসলাপুর উপজেলার তারতাপাড়া গ্রামের নুরল ইসলামের পুত্র আব্দুল কাদের ২০০৭ সনে সৌদি আরবের একটি কোম্পানীতে চাকুরীরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় নিহত হন। এরপর নিহতের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ নিহতের পিতা নুরল ইসলামকে ১৮ লাখ টাকা এবং নিহতের তিন সন্তানসহ স্ত্রী আবেদা বেগমকে ৩২ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। নিহতের পিতা নুরল ইসলাম তার অংশের ১৮ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নিজ প্রয়োজনেই ব্যয় করেন।
অপরদিকে নিহত আব্দুল কাদেরের স্ত্রী আবেদা বেগম নিজে জনতা ব্যাংক মেলান্দহের মাহমুদপুর বাজার শাখা থেকে ৩২ লক্ষ টাকা উত্তোলন করলেও নিহতের তিনজন এতিম সন্তানের কাউকেই তাদের প্রাপ্য টাকা বুঝিয়ে দেয়নি। নিহতের স্ত্রী আবেদা বেগম তার ভাইবোন ও স্থানীয় একটি কুচক্রি মহলের যোগসাজশে ক্ষতিপুরনের বিপুল পরিমান অর্থের সুযোগ সুবিধা থেকে নিহতের এতিম সন্তানদের বঞ্চিত করেছেন। তারা ওই এতিম সন্তানদের প্রাপ্য অংশের টাকা আতœসাতের হীন প্রচেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আবেদা বেগম একই গ্রামের আব্দুল হালিম মুন্সীর,লতিফ,সোলায়মান যোগসাজশে ষড়যন্ত্র মূলকভাবে প্রতিবেশী মজিবর আকন্দের পুত্র জহুরুল আকন্দ এবং একই গ্রামের আফাজ উদ্দিনের পুত্র আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এতিদের টাকা আতœসাতের মিথ্যা অভিযোগ প্রচার করছেন। এরই জের ধরে আবেদা বেগম ও তার সহযোগীরা স্থানীয় সাংবাদিককে ভুঁয়া তথ্য দিয়ে কয়েকটি পত্রিকায় জহুরুল ইসলাম ও আমিরুল বিরুদ্ধে এতিমদের টাকা প্রসঙ্গে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদও প্রকাশ করিয়েছেন। সম্প্রতি সৌদিতে নিহত আব্দুল কাদেরের দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত ক্ষতিপুরণের ৩২ লাখ টাকা আতœসাত প্রসঙ্গে স্থানীয় দুপক্ষের দ্বন্দ্ব-কলহ চরম আকার ধারণ করেছে। যেকোন মূহুর্তে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এব্যাপারে ইসলাপুর উপজেলার তারতাপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলাম আকন্দ জানান, তারতাপাড়া গ্রামের বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় তার পুত্র সবুজ আকন্দকে চাকুরী দেওয়ার প্রলভনে তার নিকট থেকে মাদ্রাসার সুপার আব্দুল হালিম মুন্সী ৫ লক্ষ টাকা উৎকোচ নিয়েছেন। ্সম্প্রতি সবুজ আকন্দকে চাকুরী না দিয়ে ৫ লক্ষ টাকাই আতœসাত করার হীন প্রচেষ্টায় আব্দুল হালিম মুন্সী সৌদিতে নিহত কাদেরের স্ত্রী আবেদা বেগমের সাথে হাত মিলিয়েছে। তারা উভয়েই নিহত আব্দুল কাদেরের ক্ষতিপূরণের অর্থ আতœসাত কেলেঙ্কারীসহ তাদের নানা অপকর্ম আড়াল করতে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে জহুরুল আকন্দ ও আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এতিমদের টাকা আতœসাতের অভিযোগ করছেন।
জনতা ব্যাংক মেলান্দহের মাহমুদপুর বাজার শাখা ব্যবস্থাপক মোফাজ্জল হোসেন জানান, সৌদি কোম্পানীতে দুর্ঘটনায় নিহত আব্দুল কাদেরের মৃত্যুজনিত ক্ষতিপুরণের টাকা জনশক্তি মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে মাহমুদপুর বাজার শাখায় নিহত আব্দুল কাদেরের স্ত্রী আবেদা বেগমের হিসাব নাম্বারে জমা হয়েছে। পরে বিভিন্ন তারিখে নিহতের স্ত্রী আবেদা বেগম নিজে শশরীরে ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে ব্যাংক ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারে সামনে চেকের পাতায় টিপসহি প্রদান করে সমুদয় টাকা তিনি নিজেই একাধিক চেকে উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন। তবে আবেদা বেগম তার নিজস্ব হিসাব নাম্বার থেকে টাকা উত্তোলন করে এতিম সন্তানদের বঞ্চিত করেছেন কিনা তা তিনি জানেন না। তবে আবেদা বেগমের নিকট থেকে এতিম সন্তানদের প্রাপ্য টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের কাউকে কোন প্রকার দায়িত্ব দেয়নি। এজন্যই আবেদা বেগম নিজেই হয়তোবা সমুদয় টাকা তার ইচ্ছামতো ব্যয় করায় নিহতের এতিম সন্তানরা বহ্চিত হয়ে থাকতে পারেন বলেও তিনি জানান।#