জাহেদুর রহমান সোহাগ, স্টাফ রিপোর্টার :
মানুষের মৃত্যুর পর জীবিত মানুষদের সর্বশেষ করণীয় থাকে, দ্রুত মৃতের জানাজা ও দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করা এবং করাও হয় তা-ই। । কবর খনন যে কারো জীবনের লক্ষ্য হতে পারে, তার প্রমাণ তিনি। মহান আল্লাহ মানবজাতির কল্যাণে কাকে কী কাজে নিয়োজিত করবেন, তা তো তিনিই নির্ধারণ করেছেন। কত বিচিত্র পেশাই না মানুষ বেছে নেয় জীবনের বাস্তবতায়। বলছি কীর্তিমান ব্যক্তি ইসহাকের কথা৷
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের নাছির মো তালুক গ্রামে ইসহাকের জন্ম ও জীবন-যাপন ।পেশায় তিনি অটোরিক্সা চালক। তাঁর যে আয়, তাতেই চলে স্ত্রী ও তিন সন্তানের ভরনপোষন এবং সংসার। টিনের চালে তিন রুমের বাঁশের ঘর যেন ইসহাকের প্রশান্তির কুটির । অসন্তুষ্টির কোনো চিহ্ন নেই ইসহাকের পরিবারের কারও এবং স্বচ্ছন্দে চলে যায় সংসার।
মাহমুদুল হকের ছেলে মো ইসহাক কবর খনন করে ইতিমধ্যে সমাজের পরিচিত মুখ। রাঙ্গুনিয়ার সেচ্ছাসেবী সংগঠন আলোকিত সমাজ স্বেচ্ছাসেবী সংঘ পেইজে “আলোকিত স্বেচ্ছাসেবক” শিরোনামে এমন কীর্তি কথা ছড়িয়ে পড়তে সবার মুখে মুখে এখন ইসহাক। দোয়া আর শুভ কামনায় হয়ে উঠে ফেইসবুক পোস্ট। তিনি কবরখানায় চাকরি করেন এমন নয়। কবর খনন তাঁর পেশা বা জীবিকার বাহন নয়, বরং আগ্রহ মাত্র।
মো. ইসহাক একজন সুস্থ, স্বাভাবিক মানুষ। শরিয়তসম্মত জীবন যাপন করেন। তিনি একজন সচ্ছল মানুষ। যিনি বিনা পারিশ্রমিকে শতাধিক উপর কবর খনন করেছেন। শীত-গ্রীষ্ম, দিন-রাত নেই, তিনি কবর খনন করে যাচ্ছেন খুশিমনে। তিনি আসলেই কখনো কোনো টাকা-পয়সা নেন না।
শখের বশে নয়, বরং এক অজানা আত্মিক তাড়নায় মো ইসহাক কবর খননের কাজ করে যাচ্ছেন বছরের পর বছর। মসজিদে শোক সংবাদ শুনলে কবরস্থানে ছুটে চলেন কোদাল, শাবল ও টুকরি হাতে।
প্রচারবিমুখ ইছহাক বলেন; কবর খননের কাজটি ভালো লাগে। মানুষের মৃত্যুর পর স্বার্থ থাকে না। নিঃস্বার্থ ভাবে কবর খননের মাধ্যমে মৃত পরিবারকে সহযোগিতা করে আমি তৃপ্তি পায়। আমার একান্ত ভালোলাগা ও ভালোবাসার পেশা বলতে পারেন কবর খনন করা।
আলোকিত সমাজ স্বেচ্ছাসেবী সংঘের এডমিন রফিক বিন সালাম বলেন ; আমরা এলাকার গুটিকয়েক তরুণদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংঘ গঠন করি। আমাদের আগে নিজ উদ্যোগে যারা এলাকায় স্বেচ্ছায় স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব নিয়েছে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে আমাদের কর্মসূচি। এমন কীর্তিমানদের কীর্তিগুলার ছড়িয়ে পুড়ুক দেশ থেকে দেশান্তরে।