নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি :
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, ‘সোনার মানুষের পরিবর্তে যারা মাসেলম্যান তৈরি করে ক্ষমতা দেখাচ্ছেন, আমি আপনাদের উদ্দেশে বলবো, সাবধান হয়ে যান, নইলে বেইজ্জত হবেন। একদম বেইজ্জত করে দেবো মানুষের সামনে। আমার নিজের কলিজার জোর সম্পর্কে আপনাদের ধারণা আছে কিন্তু।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কলিজার জোর দেখাই তা নয় কিন্তু, আমেরিকাতে দুই তিনশ ছিল আর আমি একলা ছিলাম। আমি আমার কলিজার জোর সেখানে দেখিয়ে আসছি। পালিয়েছে ওরা, মারও খেয়েছে।’
রবিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের পাগলা এলাকায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
চলতি মাসের শেষে মাঠে নামবেন উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, ‘সংশোধন হন, আল্লাহ মাফ করবেন। বিশেষ করে আমার দলের লোকেরা। কে কালকে বাঁচবেন জানেন না কিন্তু। মানুষের মনের মধ্যে জায়গা করে নেওয়ার নাম হচ্ছে রাজনীতি। রাজনীতি করতে চান না, কইরেন না। তাহলে আমাদের গায়ের ওপরে পড়বে না। কিন্তু আমাদের দল করে মূল কাজ হচ্ছে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করা। আমরা এখন এখানে আসছি, হাত তালি দিচ্ছে সবাই, বাহবা দিচ্ছে এটার কোনও দাম নেই। আমার মৃত্যুর পর যদি মানুষ বলে, আহারে লোকটা মরে গেছে। ওইটা বড় প্রাপ্তি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এই মাসের শেষ থেকে মাঠে নামবো, যদি আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রাখে। আমি সবাইকে অনুরোধ করে গেলাম, আমাদের নেতাদের সঙ্গে যদি কোনও খারাপ লোক থেকে থাকে তাকে সংশোধন করেন, নয়তো তাকে পরিহার করেন। এটা না হলে বিনা কারণে আপনি মানুষের কাছে খারাপ হবেন।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘ওই যে বিএনপির সভাপতি হয়েছে, এরকম অনেক লোক আছে নারায়ণগঞ্জে। তিনি এক সময় করেছেন আওয়ামী লীগ, এরপর গেছেন জাতীয় পার্টিতে, পরে বিএনপিতে। তিনি পরে আবার আওয়ামী লীগ এবং পুনরায় বিএনপিতে গেছে। এভাবে ৫-৬ বার দল বদল করেছে। এরা রাজনীতি করে নিজের স্বার্থে, নিজের আখের গোছানোর জন্য। পলিটিক্যাল ভাষায় যাকে বলা হয় পলিটিক্যাল প্রস্টিটিউট। তাই ওদের কাতারে যাও, আমার কোনও আপত্তি নাই। ওই দিকে যাও, ধানের শীষের জন্য ভোট করো, আমার আপত্তি নাই।’
শামীম ওসমানের সঙ্গে ছবি তুলে সাধারণ জনগণের ওপর জুলুম করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার সামনে এলে দাড়ি রেখে সবাই ভালো হয়ে যায়। আমার পাশে এসে দাঁড়িয়ে একটা ছবি তুলে, পরে সেটা অফিসে টাঙিয়ে রাখে। ওই ছবিটা দিয়ে মানুষের ওপরে জুলুম করে। আর মানুষজন গালি দেয় আমার মা-বাবাকে।’
রাজনীতিকে ইবাদত উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি হারাম খাই না। নারায়ণগঞ্জের কোনও জায়গায় এক শতাংশ জমিও কিনিনি। নিজের বাড়ি যেটা করছি, বড় ভাই আমাকে দিয়েছিল। আমার বাবা আমাদের জন্য এক টাকা রেখে যাননি। রাজনীতিকে আমরা ইবাদত হিসেবে নিয়েছি। তাই আজকে পরিষ্কার ভাষায় একটা কথা বলতে চাই, ইলেকশন করবো কী করবো না সেটা পরের হিসাব।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. নাজিম উদ্দিন আহমেদ, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলীসহ কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।