ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ
বিএনপি এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের একই সময়ে একই স্থানে কর্মসূচী ডাকায় ঠাকুরগাও সদরের রুহিয়ায় মঙ্গলবার ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। এর প্রতিবাদে ওইদিন দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে রুহিয়া থানা বিএনপি। অপরদিকে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে রুহিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগও।
রুহিয়া থানার ওসি সোহেল রানা জানান, মঙ্গলবার রুহিয়া থানা বাজারের একই স্থানে ও একই সময়ে বিএনপি এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ তাদের নিজ নিজ কর্মসূচী পালনে অনড় থাকায় আইনশৃঙ্খলা ও জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে রুহিয়া পূর্ব চৌরাস্তা, পশ্চিম চৌরাস্তা ও হাই স্কুলের মাইক্রো স্ট্যান্ডসহ আশেপাশের এলাকায় মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এ সময়ে নিষিদ্ধ করা হয় সকল প্রকার সভা, সমাবেশ ও গণজমায়েত।
এদিকে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করার কারণে বিএনপি তাদের পূর্ব নির্ধারিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করতে পারেনি। এর প্রতিবাদ জানিয়ে দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির অফিসে সংবাদ সম্মেলন করেছে রুহিয়া থানা বিএনপি।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান তিনি দাবি করেন, জ্বালানি তেল, সার ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিএনপির পূর্বঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে রুহিয়ায় তা শান্তিপূর্ণভাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২১ আগষ্ট রুহিয়া থানায় লিখিতভাবে জানানো হয়। কোন কিছু না জানিয়েই সমাবেশ শুরু আগ মুহুর্তে আকস্মিকভাবে প্রশাসনের ১৪৪ ধারা জারি করার হটকারী সিদ্ধান্তে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষেভের সঞ্চার হয়েছে এবং প্রশাসনের প্রতি সাধারণ মানুষের বিরুপ ও নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি করেছে। এর আগেও গত ২৮ আগস্ট পীরগঞ্জ উপজেলাতেও একই ঘটনা ঘটিয়েছে প্রশাসন। তারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
এ সময় রুহিয়া থানা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামাল, ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক আনছারুল হক, রুহিয়া থানা বিএনপির সাধারন সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক মানিক, রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সহিদুল ইসলাম সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিক ৩০ আগস্ট (মংগলবার) রাত সাড়ে ৮ টার সময় রুহিয়া থানা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে রুহিয়া থানা সেচ্ছাসেবক লীগের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের রুহিয়া থানা শাখার আহবায়ক বাশারুল ইসলাম সোহেল বলেন, শোকাবহ আগস্ট মাসে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং সকল সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠন কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয়ভাবে শোকের মাস হিসেবে মাসব্যাপী বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা অত্যন্ত বেদনার সাথে পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় রুহিয়া থানা সেচ্ছাসেবকলীগের মাসব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে আজ (৩০ আগস্ট মঙ্গলবার) রুহিয়া থানা সেচ্ছাসেবক লীগের আয়োজনে এক বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা করা হয়েছিল। পূর্ব নির্ধারিত বিক্ষোভ সমাবেশের দিন একই স্থানে বিএনপি সমাবেশ আহবান করে। এলাকার আইন – শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে প্রশাসন আমাদের পূর্ব নির্ধারিত অনুষ্ঠানস্থলে ১৪৪ ধারা জারী করে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা – কর্মীবৃন্দ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বিধায় আমরা শোকের মাস আগষ্টের পূর্ব নির্ধারিত অনুষ্ঠান কর্মসূচী পালন হতে বিরত থাকি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, রুহিয়া থানা সেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক আনারুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক ওমর ফারুক, যুগ্ম আহবায়ক নাসিরুল ইসলাম, রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক দিদার আলী, যুগ্ম আহবায়ক কাউসার আলী, রুহিয়া থানার ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
১৪৪ ধারা জারি প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার রহমান বলেন, উভয় দলের কর্মসূচী অব্যাহত থাকলে রুহিয়া এলাকার বিভিন্ন মোড়ে যান চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টিসহ গাড়ী ভাংচুর, ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন এবং আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ারসমূহ সম্ভাবনা ছিল। জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।