শিক্ষা সংকট মেধাবী শিক্ষার্থীদের খোঁজতে সমাজের কোমল-মতি ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা ও মনণের বিকাশে এবং নৈতিক উৎকর্ষতা সাধনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ মণিপুরী মুসলিম এডুকেশন ট্রাস্টের উদ্যাগে ২০তম বিএমইটি বৃত্তি পরীক্ষা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আদমপুরের ঐতিহ্যবাহী তেতই গাঁও রসিদ উদ্দিন বিদ্যালয়ে দু-দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়।
এ পরীক্ষায় বাংলাদেশে বসবাসরত মনিপুরি মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় তিনশ’ শিশু অংশ নেয়। দুইদিন ব্যাপী পরীক্ষায় আজ ৮ অক্টোবর (শনিবার) দ্বিতীয় দিনের সকালের শিফটে কেন্দ্র পরিদর্শন করেন হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উপসচিব নুরুল ইসলাম।
পরীক্ষা’র বিকেল শিফটে কেন্দ্র পরিদর্শন করেন কমলগঞ্জ উপজেলার সুযোগ্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব সিফাত উদ্দিন মহোদয়। এসময় তিনি গণমাধ্যমে বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মণিপুরী মুসলিম সমাজের শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের এই উদ্যোগ সকল শিক্ষার্থীদের উৎসাহী করবে। এবং উপজেলা প্রশাসন কমলগঞ্জ এই উদ্যোগকে আরো বেশি কার্যকর ও স্বচ্ছ করতে আয়োজকদের পরামর্শ দেন৷ প্রয়োজনে প্রশাসন এগিয়ে আসবে এমন আশ্বাস ঘোষণা করেন৷
এছাড়াও সুনামগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ও তেতইগাঁও রশিদ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়র এসএমসি সভাপতি ডা.আহমদ হোসেন ও কমলগঞ্জ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম পরীক্ষা হল পরিদর্শন করেন৷ মণিপুরি মুসলিম সম্প্রদায়ের শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রাখার মানসে এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের উৎসাহ উদ্দীপনা বাড়াতে এই শিক্ষা বৃত্তি আয়োজন করেছেন এবারের পরীক্ষা কমিটি’র কেন্দ্র সচিব দায়িত্ব পালন করেন তেতইগাঁও রশিদ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহেনা বেগম। হল সুপারের দায়িত্ব পালন করেন আলী আমজদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মোঃ শাহাব উদ্দিন, সহকারী হল সুপার পালন করেন কোনাগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মোঃ শাহাজ উদ্দিন৷
জানা যায়, ২০০১ সাল থেকে পঞ্চম, অষ্টম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিএমইটি বৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণ করছে এই বাংলাদেশ মণিপুরী মুসলিম এডুকেশন ট্রাস্ট’র আগেও অনিয়মিতভাবে পরীক্ষা গ্রহন করা হয়। ২০১৮ সাল থেকে দশম শ্রেণিতে সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে বিগত দুই বছর বিএমইটি বৃত্তি পরীক্ষা স্থগিত ছিল। এই বছরের বিএমইটি বৃত্তি পরীক্ষা আবার চালু হয়েছে।
উল্লেখ্য,বাংলাদেশে বসবাসরত মনিপুরি মুসলিম সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো পৌঁছানো, আলোকিত মানুষ ও সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ মণিপুরী মুসলিম এডুকেশন ট্রাস্ট এর নামে একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই সংগঠনটি সামাজিক বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করে থাকে। এই সংগঠনটি অনেক কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে, তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-শিক্ষা উপকরণ বিতরণ,দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের আর্থিক সাহায্য, কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা,গুণীজন সংবর্ধনা,শিক্ষাবিষয়ক সভা ও সেমিনার, বিএমইটি বৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, জাতীয় দিবস পালন ও বার্ষিক ম্যাগাজিন ‘প্রত্যয়’ প্রকাশ প্রমুখ।