—————–
রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো সরকার। সরকার পরিচালনার জন্য রাজনৈতিক দলের ভূমিকা একটি গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে খুবই তাৎপর্যপূর্ন।তবে সর্বক্ষেত্রে রাজনীতির প্রচলন কোনভাবেই কাম্য নয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সর্বোচ্চ মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের আতুড়ঘর হলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এখান থেকেই তৈরি হবে নতুন নতুন সব উদ্ভাবনা শক্তি, জ্ঞানের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে উঠবে জাতি। এটাই দেশের সর্বস্তরের সাধারন জনগনের প্রত্যাশা।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিচালনার গুরুদায়িত্ব ন্যাস্ত থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) এর উপর। দেশের সেরা মেধাবীদের তেরি করতে নিয়োগ থাকা কারিগরদের পরিচালনার প্রধান দায়িত্ব পালনকারী এই পদটি অবশ্যই সম্মানের, এই বিষয়ে দ্বিমত পোষন করার কোন যুক্তি নেই। কিন্ত বাস্তবে যারা দেশের এই আসনগুলো আকরে আছেন তারা এর মর্যাদা কতটুকু নৈতিক ভাবে সুরক্ষা করে চলছেন? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির তুলকালাম কান্ড এবং পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদদের লাগাতার আন্দোলনে তার পদত্যাগে বাধ্য হওয়ার ঘটনা আমরা দেখলাম।অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দূর্দশাও কিন্ত সকল সচেতন নাগরিকের জানা। তারপরেও পদের সম্মানে বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে আলোচনায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য মহোদয়দের আনা হয়। আর তেমনি এক আলোচনার মাঝে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্যার যে কথাটি উচ্চারন করেছেন তা দ্বারা তিনি কেবল তার পদের অবমাননা ঘটান নি বরং আশঙ্কা তৈরি করেছেন তার মনোভাব নিয়ে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এর প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকান্ড এবং এর আসন্ন সম্মেলন নিয়ে আলোড়ন দেশব্যাপী। আগামী সম্মেলনে ক্লিন ইমেজের কাউকে বয়সসীমার মধ্য থেকে নির্বাচিত করতে মূল দল যেমন তৎপর ঠিক তেমনি সাধারন মানুষেরও তাই প্রত্যাশা। সেখানে “যুবলীগ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেলে ভিসি পদ ছেড়ে দেবো”এমন উক্তি কেবল হাস্যকরই না পক্ষান্তরে গভীর চিন্তায় মগ্ন করে দেশের ভবিষৎ নিয়ে। তাহলে কাদের হাতে তৈরি হচ্ছে দেশের আগামী দিনের কান্ডারী? যারা দলের দায়িত্ব নিতে চায় এই সম্মানের চেয়ার প্রত্যাখান করে। পরবর্তীতে তিনি অবশ্য সাক্ষাতকার দিয়ে বলছেন তিনি নিজে চান না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিলে তিনি নিতে প্রস্তত।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষনতা শক্তি এতটা কম নয় যে তিনি কোন মেরুদন্ডহীন ব্যক্তির উপর তার সহযোগী সংগঠনের দায়িত্ব তুলে দিবেন। আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন স্যার আপনি কোন আসনে থেকে কোথায় যাওয়ার কথা বলছেন।আপনার শিক্ষকতা পেশা জীবনের ইতিহাস বলে আপনার বুদ্ধিশক্তির সামর্থ্য তো এতটা কম থাকার কথা নয়! আপনি এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরর কোষাধক্ষ্যের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এত বড় বড় পদের দায়িত্ব পালন করেও এই ক্ষুদ্র পদের লিপ্সা কিভাবে আপনার ধমনীতে প্রবেশ করে?
যুবলীগের দায়িত্বভার ও একটি গুরুত্বপূর্ন পদ। তা রাজপথে থাকা রাজনীতিবীদদের জন্য। অবশ্যই মানুষ গড়ার কারিগরদের জন্য নয়।
তবে কোন পথে আমার দেশ? আশার বাতিঘড়ের প্রদীপগুলো কাদের অধীনে? এটা কি জাতির জন্য বিপজ্জনক সংকেত নয় কি?যদি তাই হয় তবে এসব ক্ষেত্রে সংস্কার আশু কাম্য। উজ্জল হোক জাতির ভবিষৎ।
মেরুদন্ড ফিরে পাক বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশনগুলো।
তালুকদার সুকান্ত লেনিন
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা কলেজ,ঢাকা