——-
বায়তুল মাকদাস তথা আল-আকসা মুসলিম উম্মাহর কাছে অন্যতম পবিত্র এবং ভালোবাসার স্থান। সকল নবী রাসুলের পদধূলিতে পবিত্র, অসংখ্য নবীগনের স্মৃতি বিজারিত জায়গা।
১৯২০ সালে বৃটেন ইসরাইলী দের বের করে দেয়। মানবিক বিবেচনায় বাস্তুহারা ভাসমান ইহুদিদের আরবের মরুভূমিতে বসবাসের অনুমতি দেয় মুসলিম উম্মাহ। কিন্তু যে আমেরিকা ও বৃটেন ইহুদিদের নিজেদের বাসভূমি থেকে বিতারিত করে,তারাই আবার ইহুদিদের ত্রাণকর্তা হিসেবে দাঁড়ায়।ইহুদিরা আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি করে।মুসলমানদের বিরুদ্ধেই ইহুদি রা যুদ্ধ শুরু করে।বিগত ৭৫ বছর ধরে আমেরিকার মদদে অস্ত্রে গোটা ফিলিস্তিন কে প্রায় নিজেদের করে নিয়েছে ইহুদীরা।শুধু জর্ডানে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১০ লাখ মুসলিম নিরাপরাধ ফিলিস্তিনি। পাশাপাশি অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রেও আশ্রয় নিয়েছে লক্ষ লক্ষ মুসলিম।
প্রতিদিন ক্রমান্বয়ে রক্তে রক্তাক্ত হয়েছে ফিলিস্তিন।সন্ত্রাসীদের আক্রমণে ১৯৪৮,১৯৬৭,১৯৭৪,২০০৬,২০১১,২০২১ এ হাজার হাজার শিশু নারীর প্রাণ ঝড়েছে।সর্বশেষ ২০২১ সালে নামাজ চলাকালীন সময়ে মসজিদে আকসায় হামলা চালিয়ে ১০০০ এর বেশি মানুষের প্রাণ হানি ঘটে।এরপর ইহুদী সেনারা কত মুসলিম মা-বোনের সম্ভ্রম হারা করেছে।তা বলার অপেক্ষা রাখে না।হাজার হাজার নিরাপরাধ মুসলিম ইসরাইলী কারাগারে বন্দী হয়ে অমানবিক নির্যাতনে নিঃশেষ হয়ে গেছে।
গত ৭ই অক্টোবর থেকে শুরু হয় আবার ও বিমান হামলা।এরই মধ্যে ৪০০০ নিরপরাধ মানুষেরা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ইহুদীরা,যার ৪০%এর ও বেশি নারীও শিশু। পুরো গাজা শহর এখন মৃত্যু পুরী।২০০০ টনের বেশি বোমা মেরেছে ছোট্ট গাজা শহরে,যার ফলে সাজানো গোছানো সুন্দর গাজা শহর এক ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে।
সন্ত্রাসী ইসরায়েলীরা শুধু বিমান হামলা করে খ্যান্ত হয়নি বরং যুদ্ধপরাধ হিসেবে গন্য হোয়াইট ফসফরাস নিক্ষেপ করছে।বাতাসেও প্রচন্ড গন্ধ, মানুষ শাস নিতেও পারছে না।
খাবার,পানি,বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট সহ সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন গাজা শহর। এমনকি গাজা-মিশরের একমাত্র সংযোগ রাফাহ ক্রসিং যেখান থেকে ত্রাণ আসবে, তাও আসতে পারছে না। বারবার বোমা মারছে সন্ত্রাসী ইসরায়েলের পশুরা।
এরমধ্যে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ইসরায়েলে সফর করে,আগুনে ঘি ঢেলেছে।আক্রমণ আরও তীব্র করেছে। যুদ্ধাবস্থায় আহত মানুষ ও পরিবার হাসপাতালে আশ্রয় নেয়।কিন্তু অসংখ্য হাসপাতালে বোমা মেরে ধংস করেছে।শুধু আল-হিলাল হাসপাতালে বোমা হামলায় ১০০০ এর অধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ সবসময় যুদ্ধ বন্ধের দাবী করলেও ফিলিস্তিনের ক্ষেত্রে বোবা,অন্ধ,কানা হয়ে যায়।
গোটা পৃথিবী ব্যাপী সাধারণ মানুষ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে রাস্তায় নামলেও ইসরাইল কে কেউ কিছুই বলছে না।আমেরিকা,যুক্তরাজ্য, জার্মান, ফ্রান্স, ইতালি সহ পশ্চিমা বিশ্ব ইসরায়েল কে অস্র ও সেনা সহযোগিতা করলেও কোনো মুসলিম দেশ পাশে দাড়ায়নি ফিলিস্তিনের পক্ষে। শুধু মাত্র দায়সারা বিবৃতিতে ই আটকে গেছে তুরস্ক, ইরান,পাকিস্তান সহ মুসলিম রাষ্ট্র গুলো।মনে হয় যেন তারা পশ্চিমের কেনা গোলাম।আর মুসলিম বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা OIC,আর আরব লীগে যেন নিরব দর্শক। তাদের যেন কিছু করার নেই।গোটা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ কে রক্ষায় মুসলিম সামরিক জোট গড়ে তোলা কর্তব্য হয়ে দাড়িয়েছে।চিনের উহানের উইঘুর মুসলিম, বার্মার আরাকানের মুসলিম,কাশ্মীরের মুসলিম, ইরাক,সিরিয়া,জর্ডান,আফ্রিকা,ফিলিস্তিনের মুসলমানদের বাঁচাতে কার্যকর সামরিক জোট গঠনের বিকল্প নাই। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা রক্ষায় পথ,মতের পার্থক্য ভূলে সৌদি ইরান তুরস্ক, রাশিয়াকে নিয়ে ইসরায়েলে বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে যুদ্ধে নামতে হবে।
লেখক
মোঃখালিদ হোসাইন
মানবাধিকার কর্মী,রাষ্ট্রচিন্তক