——-
নশ্বর এই পৃথিবীতে আমরা অনেক সময় অনেক কিছু ভাবি, কখনো স্বপ্ন দেখি, কেউ স্বপ্ন পূরণে কাজ করে আবার কারও স্বপ্ন স্বপ্নের মতই থেকে যায়। প্রতিটি মানুষ স্বাধীন ভাবে বাঁচতে চায়,কথা বলতে চায়,মত প্রকাশের স্বাধীনতা চায়, কিন্তু পরিপ্বার্শিক এর চাপের কারনে অনেক মানুষ ভালো কিছু করতেও সাহস পাচ্ছে না, বেকার বসে থাকবে তারপরেও ছোট কাজ কিংবা ছোট পরিসরে উদ্দ্যোক্তা হতে তারা চায় না। স্লোগান একটাই, মানুষ কি বলবে আমাকে, অথবা আমি শিক্ষিত ছেলে / মেয়ে কিভাবে এ সমস্ত কাজ করতে পারি। এ ধারনাটা শুধু বাংলাদেশের মানুষের পক্ষেই বলা সম্ভব, উন্নত রাষ্ট্রে এ ধরনের কথা তারা বলে না। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ‘বারাক ওবামা’র মেয়ে তিনি ওয়েটারের কাজ করছেন তখনও যখন তার বাবা একজন প্রেসিডেন্ট, কাজে কোন লজ্জা নেই,মূলত যারা ভালো কাজে লজ্জা পায় বা কাজে বাঁধা প্রদান করে, মূলত এরা সমাজের বোঝা। জীবনে বড় কিছু হতে হলে অনেক কিছু সহ্য করতে হয়, অনেক কিছু শুনেও না শোনার ভাণ করে করে থাকতে হয়, মুখে কোন জবাব না দিয়ে কাজেই জবাব দেওয়া জ্ঞানী ব্যক্তির মহৎ লক্ষণ।
ভারতের সাবেক রাষ্টপতি,এপি,জে,আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘স্বপ্ন সেটা নয়; যেটা মানুষ ঘুমিয়ে দেখে বরং স্বপ্ন সেটা যা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না।আমরা অনেকে দ্বিবা -স্বপ্ন দেখি , স্বপ্ন পূরণে কোন কাজ করি না। অথচ ছোট কাজ দিয়েই বড় কাজের সূচনা হয়। প্রবাদ বাক্যে আছে “ছোট ছোট বালুকনা বিন্দু বিন্দু জল; গড়ে তোলে মহাদেশ, সাগর অতল”।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপ-২০২৩-এর তথ্যমতে,১৮ কোটি মানুষের বাংলাদেশে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর প্রায় ৬৩ লাখই বেকার। আর এই বেকারদের ৮৭ শতাংশই শিক্ষিত বেকার। আর ২১ শতাংশ বেকার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েও কোনো কাজে যুক্ত নন। জরিপের তথ্য বলছে, ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণেরাই বেশি বেকার, যার সংখ্যা ৩৮ লাখ। তাঁরা কোনো কাজকর্ম না করেই বছরের পর বছর চাকরির পেছনে ছুটছেন।
অথচ চাইলে ছোট পরিসরে কোন চায়ের স্টল, কিংবা কোন উদ্দ্যোক্তা খুব সহজেই হওয়া যায়, কিন্তু এটা অনেকের কাছে খুবই কঠিন। বর্তমানে কিছু শিক্ষিত সচেতন ছেলে /মেয়ে উদ্দ্যোক্তা হচ্ছে, তারা যে কোন কাজ খুব সুন্দর ভাবে করছে এবং নিজেরা ভাল থাকছে, পরিবার কিংবা দেশের কোন বোঝা হচ্ছে না তারা। সময়ের সাথে সাথে নিজেকে পরিবর্তন করাটাও একটা আর্ট।
আমাদের সমাজে এমন কিছু লোকজন রয়েছে যারা মনে করেন,নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চাকরি বা ব্যবসা উদ্দ্যোক্তা হওয়া যায় এর পরে সম্ভব না, এটা মারাত্নক ভুল। বর্তমানে প্রতিটি পরিবারে হিসেব করলে দেখা যাবে যাদের বয়স ৬০ এর উর্ধে তারা পুরোটা সময় দোকানে চায়ের আড্ডায় কিংবা অপ্রয়োজনীয় কাজে সময় ব্যয় করে, তাদের জিজ্ঞেস করলে বলবে এখন বয়স হয়েছে এখন কি কর্ম করার সময়,মূলত এখনই গুরুত্বপূর্ণ সময় আপনার সারা জীবনের সমস্ত অভিজ্ঞতা দিয়ে আপনিও ভাল কিছু করতে পারেন, শুধু একটু চিন্তার ভিন্যতা আনা চাই, অপরদিকে অধিকাংশ ছেলে -মেয়ে তারা স্মার্ট ফোন একটা পেলে গেমস ভিডিও দেখে এখানেই তাদের সময় কেটে যায়, না হচ্ছে পড়ালেখা, না হচ্ছে কোন আত্ন কর্মসংস্হান। এভাবেই যদি চলতে থাকে তবে আমাদের সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে, তাই শেষ সময় পার করেও যারা এখনো ভাবছেন কিছু করবো তারা আর দেরি না করে শুরু করে দিন, রাস্তায় নামলে রাস্তা আপনাকে বলে দিবে আপনি কোন পথে যাবেন, যদি রাস্তায় না নামেন তাহলে আপনি পথ তো খুঁজে পাবেন না। কোন কিছু অর্জন করতে হলে, প্রথমে তীব্র আকাঙ্খা থাকতে হবে, আস্হা রাখতে হবে, সর্বশেষ ধৈর্য্য এবং লেগে থাকতে হবে।যত ধরনের নেগেটিভ চিন্তা, বাধা -বিপত্তি আসুক না কেন, যদি সৎ চিন্তা এবং সৎ কর্ম হয়ে থাকে আল্লাহর সাহায্য নিশ্চয়ই আসবে কিন্তু পরিক্ষার একটি সময়কাল অতিবাহিত হওয়া অবশ্যই প্রয়োজন।
মো. আব্দুল করিম গাজী
শরণখোলা, বাগেরহাট।