-----------------------
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যাবস্থা অনুযায়ী বিধাতার আশীর্বাদে প্রতিটি সন্তান জন্মের ৫/৬ বছর পর বাংলাদেশের শিক্ষা স্তরের সর্বনিম্ন শিক্ষাস্তর প্রাইমারী শিক্ষাস্তরে ভর্তি হয়।বাংলাদেশের বিধান অনুযায়ী
শিক্ষার্থীরা হাটিহাটি পা পা করে এক একটি স্তর পেরিয়ে গতানুগতিক ভাবে মাধ্যমিক শেষ করে। বাবার মাথার ঘাম পায়ে ফেলার পরিশ্রমের টাকার কথা চিন্তা করে ও নিজের মনের ইচ্ছা পুরণের জন্য একটু হলেও ভালো ফলাফল করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে।
এর পরে উচ্চ মাধ্যমিকের দিকে অগ্রসর হয় । এই জায়গা থেকেই শুরু হারিয়ে যাওয়ার গল্পটা। প্রতিটা শিক্ষার্থীর মনে ধরে রাখা সর্বচ্চো স্বপ্নকে ছূয়ে দিতে ও পরিবারের প্রশংসিত প্রত্যাশাকে পূরণ করতে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হওয়ার ৬৫% শিক্ষার্থীরাই তাদের পরিবারের ভালোবাসা ও শাসন থেকে দূরে থেকে স্বাধীনচেতা হয়ে শিক্ষা অর্জন করে।
এক গবেষণায় দেখা যায়, মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এর ফলাফল তুলনামুলক ভাবে ৭৫% শিক্ষার্থীরই খারাপ হয়।এর মূল কারন প্রথমত,পরিবারের ভালোবাসা ও শাসন থেকে দূরে থাকা। দ্বিতীয়ত,সম্পূর্ণ স্বাধীনচেতা ভাবে সকল কাজকর্ম ও লেখাপড়া করতে পারা।
গতানুগতিকভাবে
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরও পার হয়ে যায়।এরপর শুরু হয় সন্মান নামক শিক্ষা স্তরের পথচলা।যাদের মেধা ও ভাগ্য সুপ্রসন্ন তারা সুযোগ পেয়ে যায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বাকিরাও অনার্স নামক শিক্ষাব্যবস্হা থেকে বঞ্চিত হন না। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির পর অনেকটাই নিঃসঙ্গতা, বন্ধুদের পাল্লা,প্রাইভেট পড়া ও নোট আদান প্রদানের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীরা বন্ধুত্বে আবদ্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস জীবনে একজন ছেলে আর মেয়ে একসাথে চলাফেরা করলে বন্ধুত্ব আর বন্ধুত্বে থাকে না। হয়ে যায় প্রেম ভালোবাসা নামক অদ্ভুত এক সম্পর্ক। প্রথমে বন্ধুত্ব কিংবা বড় ভাইয়ের সম্পর্কের দোহাই দিয়ে প্রেমের সম্পর্কটি আড়াল করলেও পরে গিয়ে তা আর থাকে না। পরে সেটি প্রকাশ পেয়ে যায়।
তখন একজনের ওপর অন্যজনের দাবি চলে আসে। কর্তৃত্ব চলে আসে।সন্মান নামক শিক্ষাস্তরে লেখাপড়ার পরিবর্তে ভালোবাসা/প্রেমের ফাঁদ নামক অন্ধকারের অধ্যায় পা রাখে শিক্ষার্থীরা।একইসাথে ভুলেযায় নিজের মনে গেঁথেরাখা হাজার বছরের স্বপ্নগুলোকে ও পরিবারের প্রত্যাশাকে।তখন নিজের কাছে মনে হয় প্রেম/ভালোবাসাতেই যেন স্বর্গের সুখ।এতে সারাবছর ছেলেমেয়ে দুজনেরই
পড়াশোনা না করায় বছর শেষে ফলাফল বিপর্যয় ঘটে।হায়!এ যেন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সর্বোত্তম মেরুদন্ডটি ভেঙ্গে গেল। ভুলেযায় শিক্ষার্থীরা নিজেদের আশা ও পরিবারের প্রত্যাশা।মনে হয় ভালোবাসার পাত্রীটিই ছিল নিজের আশাও পরিবারের প্রত্যাশা ।
কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় প্রেমের লাগাম টেনে রাখাটাও দুরূহ হয়ে পড়ে।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেমের স্থায়িত্ব কম থাকে। সে প্রেম হয় কেবলই সময় কাটানো। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনটাকে উপভোগের নামে জীবনের অঙ্কে দীর্ঘশ্বাসের পাল্লাটিকে যেন আরো বেশি ভারী করা।ক্যাম্পাসের প্রেমের দীর্ঘস্থায়িত্বটি কম হয়। ক্লাসমেট হলে সে স্থায়িত্বের হারটা একটু বেশি হয়। কিন্তু সিনিয়র কারো সাথে যদি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তাহলে তার স্থায়িত্ব খুবই কম। কারন ছেলেটি পাশ করে চলে যাওয়ার পরও মেয়েটি ক্যাম্পাসে থেকে যায়।
কর্মজীবনে ফিরে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়।প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় স্থান নিতে পারে না।কারন,সন্মান নামক শিক্ষাস্তরে লেখাপড়ার পরিবর্তে প্রেম করে অযথা সময় নষ্ট করছে।যার কারনে ছেলেটি আর প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।ক্যাম্পাসে যে মেয়েটিকে ভালোবাসার গল্প শুনিয়ে এসেছিলো, সে গল্পটা অনেক আগেই শেষ হয়ে যায়। মেয়েটির বিয়ে হয়ে যায় অন্য কোথাও। এর পরে শুরু হয় (নেশা জাতীয় দ্রব্য) তথাকথিত গাঁজা ও ইয়াবা সেবন করা।এ যেন জীবন যাত্রায় চলে আসে এক ভয়াবহ দুর্যোগ। কর্মজীবনে ফিরে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়।তখন ছেলেটিকে পড়তে হয় পরিবারের নানা চাপে।বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা প্রেমে পড়েন কিংবা সিনিয়র, সহপাঠীদের সাথে একটা সমঝোতায় পৌঁছায় তখন পড়াশোনার ওপর তা কতটা প্রভাব পড়ে তা কেবল তারাই উপলব্দি করেন।এভাবেই প্রেমের মায়াজালে পরে যেন হারিয়ে যাচ্ছে সোনার ছেলেরা!
-----------------
মোঃ ফয়সাল মাহমুদ
শিক্ষার্থী : বিএম কলেজে, বরিশাল।
সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১০