ঢাকামঙ্গলবার , ১৩ মে ২০২৫
  1. সর্বশেষ

কানাডার জীবন: নেতিবাচক দিক

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

–মো:মামুন উর রশীদ, কানাডা প্রবাসী :

পড়াশুনা, চাকুরী এবং পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুবাদে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং কানাডার জীবন সম্পর্কে কিছু চিত্র তুলে ধরছি।

এসব দেশের ভাল দিকগুলো হলো- এসব দেশে আইনের প্রয়োগ আছে, কেউ আইনের উর্ধে নয়। এখানে খারাপ লোকও আছে, তবে তারা আইনের ভয়ে ভাল থাকে, নিয়ম মেনে চলে। এসব দেশের সিস্টেমই এমন যে আপনাকে সৎ থাকতে বাধ‍্য করবে, কোন রকম দুর্নীতি বা উল্টা-পাল্টা কাজ করতে হলে বরং অনেক কসরত করে বুদ্ধি খাঁটিয়ে তা করতে হবে যাতে ধরা না পরেন।

এসব দেশে সবাই সবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সব কাজকেই সবাই সম্মানের চোখে দেখে। সবাইকে আয় অনুপাতে টেক্স দিতে হয়, যে বেশি আয় করে তাকে বেশি টেক্স দিতে হয়, আর যে কম আয় করে তাকে কম টেক্স দিতে হয়। যার কারনে ধনী এবং দরীদ্রের মাঝে আয়ের এবং জীবনযাত্রার মানের খুব বেশি একটা পার্থক‍্য থাকে না। প্রত‍্যেকেরই জীবন-যাপনের মান অনেক উন্নত। চিকিৎসা এবং হাইস্কুল পর্যন্ত পড়ালেখা রাষ্ট্র নিশ্চিত করে। যদিও ইউনিভার্সিটিতে পড়ার খরচটা অনেক বেশি, তবে সেটার জন্য লোনেরও ব্যবস্থা আছে।

বৃদ্ধ বয়সে সকলেই বয়স্কভাতা পায়। যারা চাকুরী করেছে তারা পেনশনটা একটু বেশি পায়। রাস্তা-ঘাটে ট্রাফিক জ‍্যাম নেই, পরিবেশ দূষন নেই। প্রকৃতিকে রক্ষা করার জন‍্য ওরা সব রকমের ব‍্যবস্থাই করে।

তবে খারাপ দিকগুলো হলো, যারা দেশে বড় বড় চাকুরী করতো- ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, ল-ইয়ার বা প্রফেসর ছিল, তারা বেশিরভাগই এখানে এসে নিজের পেশায় ঢুকতে পারে না। এদেশে এসে তাদেরকে আবার এদেশের উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করতে হয়, কারন কানাডাতে অন‍্যদেশের পড়াশুনা বা সার্টিফিকেটকে মূল‍্য দেয় না। ডাক্তার, ইন্জিনিয়ারদেরকে এদেশে কাজ করার জন‍্য লাইসেন্স নিতে হয়, যে পথটা খুব সহজ নয়। যার কারনে দেখা যায় যারা দেশে অনেক বড় বড় পজিশনে ছিল, তারা এখানে আসার পর হয়তো দোকানে, রেস্টুরেন্টে, গ‍্যাস স্টেশনে, সিকিউরিটিতে বা অন্য কোন কাজ করছে অথবা টেক্সি চালাচ্ছে। যেটা তাদের জন‍্য খুবই পীড়াদায়ক। হাইস্কীল ইমিগ্রেশনের কারনে এসব দেশে যারা ইমিগ্রেশন নিয়ে আসে প্রত‍্যেকেই উচ্চ শিক্ষিত, কারো একাধিক মাস্টার্স অথবা একাধিক পি এচ ডি আছে। কাজেই এখানে ছোট-খাঁটো জব যারা করে তারাও উচ্চ শিক্ষিত। আর ঐ কাজগুলো করার জন‍্য কম্পিউটার এবং ইংরেজির যে দক্ষতা লাগে সেটা আমাদের দেশের অনেক উচ্চ শিক্ষিত ব‍্যক্তিরও থাকে না। তারপরও একজন ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, আইনজীবি বা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে যখন এধরনের জব করতে হয় তখন সেটা তাকে অনেক মানসিক পীড়া দেয়।

অনেকেই হয়তো বলবেন, তাহলে এসব দেশে থাকার দরকারটা কি, দেশে চলে গেলেই তো হয়! কেউ কেউ চলে যায়, তবে বেশিরভাগ লোকই থেকে যায় কারন অনেকেই হয়তো চাকুরী ছেড়ে এসেছে, দেশে যেয়ে আবার চাকুরীটা ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। আর বেশিরভাগ লোক ফিরে যায় না কারন, এখানে ছোট খাটো চাকুরি করেও সে যে মানের জীবনযাপন করতে পারে, দেশে বড় চাকুরী করেও সে মানের জীবনযাপন করা তার সম্ভব হয় নি।

তাছাড়া উপরে যে সুবিধাগুলোর কথা বললাম ওগুলো তাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ চাকুরীর পদমর্যাদার চেয়েও।

আরেকটা খারাপ দিক হচ্ছে কাজের লোক নেই। সব কাজ নিজের করতে হয়। আপনি ক্লীনার, কুক রাখতে পারেন, তবে তাকে যে পরিমাণ টাকা বেতন দিতে হবে সেটা আপনার ইনকামের সমান অথবা তার চেয়ে বেশি হবে, যার কারনে সবাই নিজের কাজ নিজেই করে।

অনেকের কাছে হয়তো মনে হবে এটা ফ্রি সোসাইটি, কাজেই সন্তান মানুষ করা খুবই কঠিন। আমি সেটার সাথে একমত নয়। বাংলাদেশও এখন সন্তান মানুষ করা অনেক কঠিন! বাবা-মা সন্তানকে কতটা সময় দিচ্ছে, পারিবারিক শিক্ষা, পরিবারের মূল‍্যবোধ, এগুলো সন্তান মানুষ করার ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এদেশে বাচ্চাদেরকে স্কুলে ছোটকাল থেকে ন‍ৈতিকতার যে শিক্ষা দেওয়া হয় এবং ওদের যে মূল‍্যবোধ তৈরি হয়, সেটা সত‍্যিই মুগ্ধ হওয়ার মতো।

কেউ যদি ভাল একটা চাকুরী পেয়ে যায় আর নিজের কাজ নিজে করতে অসুবিধা না থাকে, তাহলে তার কাছে এদেশ স্বর্গই মনে হবে।

তবে সব দেশেরই ভাল এবং মন্দ দিক থাকে। আমার লেখা পড়ে কেউ দয়া করে এই ধারনা পোষন করবেন না যে আমি আপনাদেরকে দেশের বাইরে সেটেল হতে উৎসাহিত করছি অথবা নিরুৎসাহিত করছি। আমি শুধু আমার অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করছি, আর কিছুই নয়।

264 Views

আরও পড়ুন

সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ব নির্ধারিত স্হানে দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন

শরণখোলায় বনের রাণী লোকালয়ে! ধরা পড়েও ফিরল নিজ রাজ্যে।

বোয়ালখালীতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপিত

কাপাসিয়ায় আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সদস্য গাফ্ফার চৌধুরীর স্মরনে খতমে কোরআন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে সোনাগাজীর তিন ইউনিয়নে তাঁতী দলের প্রস্তুতি মিছিল

মহেশখালীতে আলীগের নেতৃত্বে সুন্নি সমাবেশ।

বিশ্বম্ভরপুরে এক দফা-এক দাবি বাস্তবায়নে ইউএনও মফিজের অপসারণে লং ‘মার্চ ও অবস্থান কর্মসূচি

টেকনাফে পানের বরজে দুটি বস্তা থেকে১৬কোটি টাকার ইয়াবা উদ্ধার

সাগর পথে মিয়ানমারে পাচারকালে৭৪২বস্তা ইউরিয়া সারসহ ট্রলার জব্দ,আটক-১১

দেশসেরা পিটিআই সুপারিনটেনডেন্ট রফিকুল ইসলাম তালুকদার

স্ক্যাবিস: প্রতিরোধে জনসচেতনতা প্রয়োজন