———–
একবিংশ শতাব্দির এই যুগে এসেও আমাদের মনে প্রশ্নের উদয় হয় “মানবতা” নিয়ে।যেখানে শত শত বছর পেড়িয়ে সেই হিংস্রতার যুগ টপকিয়ে ঘাম ঝড়ানো শ্রম,আর দুনিয়া কাপানো মনীষীদের বুদ্ধিমত্তার সংমিশ্রনে আমরা চলে আসলাম “সভ্য”যুগে সেখানে কি আসলেই সভ্যতা তার আসল সংজ্ঞার প্রতিফলন করতে পেরেছে??যদি তাই হতো তবে কেন সাড়ে তিন বছরের কন্যা শিশুর উপর ঝাপিয়ে পড়ে “মানুষ”নামক জন্তুর যৌন লালসা??বাস যাত্রাকালে একা কেন নিরাপদ নয় আমার বোন??ধরে নিলাম শিক্ষার প্রদীপ তাদের আলো দিতে পারে নাই বলেই তারা হিংস্রতায় অগ্রগামী।কিন্ত যারা আমরা বর্তমান প্রজন্ম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দিকে ঝুকছি তারা কতটুকু সুশিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন দেখছি??না কি এই শিক্ষাকে পুজি করে প্রতিযোগীতায় মত্ত থাকার প্রতিফলনে আমরা হারিয়ে ফেলছি আমাদের জন্মগত মনুষ্যত্বটুকুও?শিক্ষা জীবনের প্রাথমিক পর্যায় থেকে পারিবারিক নির্দেশনা”প্রথম হওয়া চাই”যা চলতে থাকে সমগ্র শিক্ষা জীবন জুড়ে।এক পর্যায়ে এই নির্দেশনা পরিবার থেকে আসার প্রয়োজন রাখে না।নিজের মনেই বইতে থাকে “প্রথম “হওয়ার দমকা হাওয়া।কারন শৈশবকাল কাদামাটির ন্যায়।এটাকে আপনি যেভাবে চাইবেন ঠিক সেভাবেই পাবেন উর্বর অবস্থায়।আর সেই প্রথম হওয়ার বাসনা তখন কেবল শিক্ষাক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ থাকে বিস্তৃত হতে থাকে রাজনৈতিক অঙ্গন,সামাজিক আধিপত্য,যে কোন মূল্যে অর্থ উপার্জনে অগ্রসর থাকা যা থেকে উপভোগ করা যায় উচ্চভিলাষী জীবন।আর এ থেকেই সৃষ্টি হয় আমার দেশের সকল অনাচার।কিন্ত ভাবুন যদি
শৈশব অবস্থায় দীক্ষা দেয়া হতো তুমি কেবল প্রতিষ্ঠিত জীবন গড়তেই নিজেকে ব্যস্ত রেখো না,মনে রেখো তুমিও মানুষ;উচ্চ জীবন নয় গড়ে তুলবে উচ্চ মানসিকতা।তাহলে কি আমাদের সমাজের আজকের এই দূর্দশা হতো??নিশ্চয়ই না।অসুস্থ প্রতিযোগীতা যেকে বসে আছে সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে।যা থেকে উত্তরন পাওয়া কতটা কঠিন তা হয়তো আমাদের সমাজের সর্বক্ষেত্রে সেই ধারনা আসে নি।যখন আসবে তখন হয়তো এটা নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে।এই যে ধরুন আবরার হত্যাকান্ড যারা ঘটিয়েছে তারাও কিন্ত বুয়েটের ছাত্র ছিলো।তারা তাদের রাজনৈতিক আধিপত্যকে প্রকাশ করতে গিয়ে কতটা অমানুষিক হয়েছে একবার ভাবুন।আমি মনে করি ঐ যে শৈশবে “তোমাকে প্রথম হতে হবে” এইরুপ বাক্যের পরিপূর্ন ফলাফলই আধিপত্যের সূতিকাগার। জীবনটা কেবল প্রতিযোগীতার না,এটা উপভোগেরও।প্রতিটা ভূমিষ্ঠ শিশুর কোন না কোন প্রতিভা থাকে।তাকে তার প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ করে দিন।জোড় করে উচ্চ জীবনের আকাঙ্ক্ষা চাপিয়ে দিবেন না!তার পরিনতি কিন্ত পরিবার,সমাজ সর্বোপরি রাষ্ট্রকে পোহাতে হয়।তাই আওয়াজ তুলুন “শিক্ষা হোক উচ্চ মানসিকতা গড়ার জন্য,উচ্চভিলাষী জীবনের জন্য নয়”
আজো স্বপ্ন দেখি সুস্থ সমাজের,আজো দেখতে চাই “সোনার মানুষদের”
জয় হোক আমার সোনার বাংলাদেশের।
————-
তালুকদার সুকান্ত লেনিন
অনার্স সেশন(২০১৮-২০১৯)
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা কলেজ,ঢাকা