২০১৩ সালে ৬ই এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের সাড়া জাগানো ঐতিহাসিক লংমাচ ও মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর শাপলা চত্বরে। স্বাধীনতার পর এতো বড় মহাসমাবেশ দেশবাসী আর লক্ষ্য করেনি। নাস্তিকতার বিরুদ্ধে এ ঐতিহাসিক মহাসমাবেশ দেশে বাম রাম ও নাস্তিকদের বুকে কম্পন জাগিয়ে দিয়েছে। এ ঐতিহাসিক মহাসমাবেশে হেফাজতের পক্ষ থেকে ১৩ দফা দাবী পেশ করে। ৩০ এপ্রিল পযন্ত সরকারকে দাবী বাস্তবায়নের সময় বেধেঁ দেয়া হয়। যদিও দাবী পেশ করার পর পরই স্বরাষ্টমন্ত্রী ও বন ও পরিবেশ মন্ত্রী দাবীগুলো বিবেচনার আশ্বাস দেয়। কিন্তু আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ একে মধ্যযুগীয় ববরতা বেলে আখ্যায়িত করেন। পরে সরকারপ্ন্থী নারীবাদীসহ নানা সংগঠন মাঠে নামে এ ১৩ দফার বিরুদ্ধে। নারীবাদী সংগঠনগুলো এসব দাবীকে তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি ও প্রগতিবাদের বিরুদ্ধে ঘোষনা দিয়ে এর বিরুদ্ধে মাঠে আন্দোলনে নেমেছে। এ ১৩ দফার মধ্যে চার নম্বরে ছিল * ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বালনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করা। এ দফাকে নারীবাদী সংগঠন গুলো তাদের উন্নতি ও অগ্রগতির অন্তরায় বলে মনে করেন। নারীবাদী সংগঠনগুলোসহ আওয়ামী পন্থী সকল সংগঠন মনে করেন এসব মানলে নারীদের সব কাজ কম ফেলে দিয়ে বাড়ীর চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী থাকতে হবে। বিশেষ করে সহশিক্ষা উঠিয়ে দিতে হবে বলে তারা মনে করেন। আজকের আলোচনায় আমরা এ সহশিক্ষা নিয়ে একটি বিশ্লেষনধমী পযালোচনা করবো যাতে প্রমাণিত হবে সহশিক্ষা আসলে কতটুকু উপকারজনক? সহশিক্ষাকে প্রায় সবাই উন্নয়ন ও অগ্রগতির সোপান বলে মনে করেন ইসলামপন্থী দলগুলো ছাড়া। বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকাতে সহশিক্ষাকে খুবই উপকারী বলে মনে করা হতো। অথচ সময়ের ব্যবধানে তা আজ ভূল প্রমাণিত হয়েছে। গত ২০০৮ ইং সালের মে মাসে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত জার্নাল অফ ইন্টারন্যাশনাল উইমেন্স স্টাডিস দু’ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সফলতার ক্ষেত্রে এক চমকপ্রদ পরিসংখ্যান পেয়েছেন। পরিচালিত জরীপ থেকে দেখা যায় বালিকা বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরতদের ৮৫ শতাংশ বালিকা এবং বালক বিদ্যালয়গুলো থেকে ৯৩ শতাংশ বালক কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। পক্ষান্তরে সম্মিলিত স্কুল থেকে মাত্র ৭৩ শতাংশ বালিকা এবং ৮৪ শতাংশ বালক কলেজে ভর্তি হতে পারে। তাছাড়া পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ৭৮ শতাংশ বালিকা এবং ৮৩ শতাংশ বালক উচ্চ শিক্ষা অর্জনের সুযোগ পায়। পক্ষান্তরে সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাত্র ৫৭ শতাংশ বালিকা এবং ৬১ শতাংশ বালক উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ পায়। উপরন্তু পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭৮ শতাংশ বালিকা এবং ৮১ শতাংশ বালক ভাল প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য নির্বাচিত হয়। পক্ষান্তরে সহশিক্ষা প্রতিষ্টানের মাত্র ৩৩ শতাংশ বালিকা এবং ৬০ শতাংশ বালক ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ পায়। এছাড়া পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩৭ শতাংশ বালিকা এবং ৬৪ শতাংশ বালক ইঞ্জিনিয়ারিংএ পড়ার যোগ্যতা অর্জন করে। পক্ষান্তরে সহ শিক্ষা থেকে মাত্র ১৬ শতাংশ বালিকা ও ৪৫ শতাংশ বালক এ যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। নার্সিং ও শিক্ষকতায় মেয়েদের অংগ্রহণ যথাক্রমে ৬০ শতাংশ ও ৪৮ শতাংশ এবং ছেলেদের অংশগ্রহণ ৩ শতাংশ ও ১৩ শতাংশ। সূত্র: জার্নাল অফ ইন্টারন্যাশনাল উইমেন্স স্টাডিজ, যুক্তরাষ্ট্র
পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের তুলনা সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অনেক পিছিয়ে পড়ার পেছনে ইন্টারন্যাশনাল উইমেন্স স্টাডিজের জার্নালের গবেষনায় অনেকগুলো কারণ বেরিয়ে এসেছে। এতে দেখা যায় সহশিক্ষার ক্ষেত্রে মেয়েরা ছেলে বন্ধু কিংবা শিক্ষকদের দ্বারা অনেকভাবে নির্যাতিত হওয়ার পাশাপাশি ছেলে মেয়েরা একে অপরের দ্বারা আকৃষ্ট হয় কিংবা হওয়ার পিছনে অনেক চিন্তা, সময় ও অর্থ ব্যয় করে ফলে তাদের একাডেমিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্যদিকে পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশুনা ও অন্যান্য ব্যাপারে অধিক মনোযোগী হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপ ও আমেরিকাতে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। অনেকটা অবাধ স্বাধীনতা ও নানাবিধ কারণে পশ্চিমা বিশ্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে শিক্ষার্থীদের ফলাফল দিনদিন খারাপের দিকে যাচ্ছিল। বিশেষ করে প্রচলিত সহশিক্ষার ফলে ছেলে মেয়েদের সহাবস্থান ও অবাধ মিশ্রনের সুবাদে একদিকে যেমন নারী নির্যাতন, অপ্রাপ্ত বয়সে গর্ভধারণ, লিভটুগেদার, যৌনব্যাধির সংখ্যা প্রভৃতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছিল, অন্যদিকে তাদের একাডেমিক ফলাফলও অনেক নিম্নগামী হচ্ছিল। এই প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা নীতিনির্ধারক ও অভিভাবকেরা ছেলে-মেয়ের পড়াশুনার জন্য পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে ঝুঁকতে থাকে। বর্তমানে অধিকাংশ অভিভাবক সন্তানদেরকে পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে অনেকটাই প্রতিযোগিতা করে থাকেন। কারণ এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফলাফলসহ বিভিন্ন দিক থেকে ছেলেমেয়েদের সম্মিলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অনেক এগিয়ে। ১৯৫৮ আমেরিকায় উচ্চ বিদ্যালয় (সহশিক্ষা) এর অধ্যক্ষদের মধ্যে একটি সমীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়েছিল আপনার ছাত্র-ছাত্রীদের প্রধান সমস্যাগুলি কি? উত্তর ছিল * বাড়িতে যা কাজ করতে দেওয়া হয় তা না করা। * জিনিসপত্রের প্রতি মমতা নেই যেমন-বই ছুঁড়ে ফেলে। * ঘরের আলো জ্বেলে রাখে,দরজা জানালা খোলে রাখে।* ঘরে থুথু ফেলে । * ঘরের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করে।৩০ বছর (এক প্রজন্ম) পরে ১৯৮৮ সালে এই সমীক্ষায় একই প্রশ্ন করা হলে উত্তরগুলি আশ্চযজনক ভাবে ভিন্ন। বতমানে সমস্যাগুলো হলো:* গভপাত* এইডস* ধষণ* সমকাম* মাদকাসক্তি * হিংসাত্মক আতংক, হত্যা, বন্দুক আর বিদ্যালয়ের মধ্যে ছোরা ছুরির অবাধ চলাচল। ড: কিনজের এক গবেষনায় দেখা যায় আমেরিকার উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শতকরা ৮৪ জন,কলেজের শতকরা ৬৭ জন অবাধ যৌনাচারে লিপ্ত হয়। গত ২০১০ সালে ১৮ জুন যুক্তরাষ্ট্রের টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্লুচেস্টার হাইস্কুলে গ্রীষ্মের বন্ধে ১৭ জন বালিকা গর্ভধারণ করেছে এবং এর আগের বছর স্কুলে মোট ১ হাজার ২০০ বালিকা গর্ভধারণ করে। এ ছাড়া এপি পরিবেশিত এক খবরে বলা হয়, ওহিও রাজ্যে টিমকিন সিনিয়র হাইস্কুলে ১৩ শতাংশ ছাত্রী গর্ভবতী হয়। উপরের আলোচনায় ফুটে উঠেছে সহশিক্ষার ভয়াবহতার করুণ চিত্র।এরই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে সহশিক্ষা ও সিঙ্গেল সেক্স এডুকেশনের মধ্যে পযাÐলোচনা করলে দেখা যায় সিঙ্গেল সেক্স এডুকেশনের সাফল্যেই বেশি।ছেলে ও মেয়ে আলাদা¬ এমন স্কুলগুলো সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ঈর্ষনীয় ভালো ফল করছে। ২০০৯ সালে এসএসসি পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, সারাদেশে সেরা ২০০টি স্কুলের মধ্যে মাত্র ৩৯টি স্কুলে সহশিক্ষাব্যবস্থা আছে। বাকি ১৬১টি স্কুল হয় বালক বা বালিকা বিদ্যালয় অথবা ছেলে ও মেয়েদের পৃথক শিফট রয়েছে।
২০০৭ ঢাকা বোর্ডে সেরা ৫ কলেজের মধ্যে ৫ টিই ছেলে-মেয়ে পৃথক শিক্ষাপদ্ধতি চালু রয়েছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ২৫৪ জন পরীক্ষার্থী।ঢাকা বোর্ডে শীর্ষ স্থান অধিকার করেছে নটরডেম কলেজ। এ কলেজে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২ হাজার ১৬৫ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ২ হাজার১৩৫ জন। পাসের শতকরা হার ৯৮.৬১ ভাগ। এ কলেজ থেকে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮২৫ জন। দ্বিতীয় স্থানে ভিকারুননিসা নূন কলেজ। ভিকারুননিসায় এবার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ হাজার ১৩৪ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১ হাজার ১২১ জন। পাসের হার ৯৮.৮৫ ভাগ। এ কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৯৩ পরীক্ষার্থী। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ঢাকা সিটি কলেজ। এ প্রতিষ্ঠান থেতে এবার পরীা দিয়েছে ২ হাজার ৯ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ১ হাজার ৯৮৪ জন। পাসের হার ৯৮.৭৬ ভাগ। সিটি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে৩৪৮ পরীক্ষার্থী।চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানের মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৯৪০ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৯৩৩ জন। পাসের শতকরা হার ৯৯.২৬ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৭৬ পরীক্ষার্থী। ৫ম স্থানে রয়েছে হলিক্রস কলেজ। এ প্রতিষ্ঠান থেকে এবার পরীক্ষা দিয়েছিল ৭৩০ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ৭২৭ জন। পাসের হার ৯৯.৫৯ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৩৯ জন। ঢাকা বোর্ডের মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় ফলাফলের দিক থেকে এগিয়ে থাকা ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭টিই সিঙ্গেল সেক্স শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ৮ বোর্ডের ফলাফল বিশ্লেষণেও দেখা প্রায় ৮০% শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই পৃথক তথা সিঙ্গেল সেক্স শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন বোর্ডের সেরা ২০স্কুল স্কুলের মধ্যেও ১৭ টি সিঙ্গেল সেক্স শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
২০১১ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলে ১০ বোর্ডের মধ্যে সেরা ১০ কলেজের নয়টিই সহশিক্ষাবিহীন। ফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, শীর্ষ ১০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ঢাকার তিনটির পাশাপাশি সমান সংখ্যক প্রতিষ্ঠান রয়েছে রাজশাহীর। কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম ও দিনাজপুরের রয়েছে একটি করে প্রতিষ্ঠান।
দেশ সেরা দশের তালিকা:
দেশের আটটি সাধারণ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের গ্রেড পয়েন্টের ভিত্তিতে ১০ বোর্ডের ২০টি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
১. রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ- ৯৪ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট
২. রংপুর ক্যাডেট কলেজ- পয়েন্ট ৯১
৩. পাবনা ক্যাডেট কলেজ ৯০ পয়েন্ট
৪. ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজ- ৮৯ দশমিক ৮০পয়েন্ট
৫. ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ – ৮৯ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট
৬. রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ- ৮৯ দশমিক ২৭ পয়েন্ট
৭. ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ- ৮৯ দশমিক ১৮ পয়েন্ট
৮. জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজ- ৮৮ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট
৯. মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ- ৮৮ দশমিক ৭২ পয়েন্ট এবং
১০. ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ- ৮৮ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট
উপরিউক্ত ১০টি কলেজের মধ্যে কেবল রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে সহশিক্ষা বিদ্যমান।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রোকেয়া আক্তার বেগম বলেন, আমি সহশিক্ষা সমর্থন করি না। এটি ছেলেমেয়েদের জন্য খারাপ পরিণতি ডেকে আনছে। তাছাড়া মোবাইল ও টেলিভিশন সংস্কৃতি তাদের পরস্পরের প্রতি উৎসাহিত করছে এবং এর ফলে তারা লেখাপড়ায় অমনোযোগী হচ্ছে। দেশে শিক্ষার ক্ষেত্রে আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ব্যাপারে স্বঘোষিত কিছু সুশীল ও নারীবাদীরা খোঁড়া আপত্তি জানালেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছেলে-মেয়েদের পৃথক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহ ঈর্ষণীয় সফলতা অর্জন করছে। তাই পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে কিছু মুখস্ত কথা ও হীনমন্যতা বোধ না করে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে যোগ্য করে গড়ে তোলে দেশকে বিশ্ব দরবারে টিকে থাকতে হলে বাস্তবতা উপলব্ধি করে নিজেদের আর্থ সামাজিক ও নিজস্ব মূল্যবোধের আলোকে শিক্ষা পদ্ধতিকে ঢেলে সাজাতে হবে।তাই উপরের পর্যালোচনামূলক বর্ণনা আর এ ব্যাপারে হেফাজতে ইসলামের দাবীকে গ্রহণ করে দেশে পৃথক পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পদ্ধতি চালু করে ভবিষ্যত প্রজন্ম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহবান জানায়। কারণ যে পশ্চিমাদের অনুসরনে আমরা চলতে চাই তারা নিজেরাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দিক পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ব্যাপারে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট মহলের যত তাড়াতড়ি শুভ বুদ্ধির উদয় হবে ততই মঙ্গল২০১৩ সালে ৬ই এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের সাড়া জাগানো ঐতিহাসিক লংমাচ ও মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর শাপলা চত্বরে। স্বাধীনতার পর এতো বড় মহাসমাবেশ দেশবাসী আর লক্ষ্য করেনি। নাস্তিকতার বিরুদ্ধে এ ঐতিহাসিক মহাসমাবেশ দেশে বাম রাম ও নাস্তিকদের বুকে কম্পন জাগিয়ে দিয়েছে। এ ঐতিহাসিক মহাসমাবেশে হেফাজতের পক্ষ থেকে ১৩ দফা দাবী পেশ করে। ৩০ এপ্রিল পযন্ত সরকারকে দাবী বাস্তবায়নের সময় বেধেঁ দেয়া হয়। যদিও দাবী পেশ করার পর পরই স্বরাষ্টমন্ত্রী ও বন ও পরিবেশ মন্ত্রী দাবীগুলো বিবেচনার আশ্বাস দেয়। কিন্তু আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ একে মধ্যযুগীয় ববরতা বেলে আখ্যায়িত করেন। পরে সরকারপ্ন্থী নারীবাদীসহ নানা সংগঠন মাঠে নামে এ ১৩ দফার বিরুদ্ধে। নারীবাদী সংগঠনগুলো এসব দাবীকে তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি ও প্রগতিবাদের বিরুদ্ধে ঘোষনা দিয়ে এর বিরুদ্ধে মাঠে আন্দোলনে নেমেছে। এ ১৩ দফার মধ্যে চার নম্বরে ছিল * ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বালনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করা। এ দফাকে নারীবাদী সংগঠন গুলো তাদের উন্নতি ও অগ্রগতির অন্তরায় বলে মনে করেন। নারীবাদী সংগঠনগুলোসহ আওয়ামী পন্থী সকল সংগঠন মনে করেন এসব মানলে নারীদের সব কাজ কম ফেলে দিয়ে বাড়ীর চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী থাকতে হবে। বিশেষ করে সহশিক্ষা উঠিয়ে দিতে হবে বলে তারা মনে করেন। আজকের আলোচনায় আমরা এ সহশিক্ষা নিয়ে একটি বিশ্লেষনধমী পযালোচনা করবো যাতে প্রমাণিত হবে সহশিক্ষা আসলে কতটুকু উপকারজনক? সহশিক্ষাকে প্রায় সবাই উন্নয়ন ও অগ্রগতির সোপান বলে মনে করেন ইসলামপন্থী দলগুলো ছাড়া। বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকাতে সহশিক্ষাকে খুবই উপকারী বলে মনে করা হতো। অথচ সময়ের ব্যবধানে তা আজ ভূল প্রমাণিত হয়েছে। গত ২০০৮ ইং সালের মে মাসে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত জার্নাল অফ ইন্টারন্যাশনাল উইমেন্স স্টাডিস দু’ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সফলতার ক্ষেত্রে এক চমকপ্রদ পরিসংখ্যান পেয়েছেন। পরিচালিত জরীপ থেকে দেখা যায় বালিকা বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরতদের ৮৫ শতাংশ বালিকা এবং বালক বিদ্যালয়গুলো থেকে ৯৩ শতাংশ বালক কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। পক্ষান্তরে সম্মিলিত স্কুল থেকে মাত্র ৭৩ শতাংশ বালিকা এবং ৮৪ শতাংশ বালক কলেজে ভর্তি হতে পারে। তাছাড়া পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ৭৮ শতাংশ বালিকা এবং ৮৩ শতাংশ বালক উচ্চ শিক্ষা অর্জনের সুযোগ পায়। পক্ষান্তরে সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাত্র ৫৭ শতাংশ বালিকা এবং ৬১ শতাংশ বালক উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ পায়। উপরন্তু পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭৮ শতাংশ বালিকা এবং ৮১ শতাংশ বালক ভাল প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য নির্বাচিত হয়। পক্ষান্তরে সহশিক্ষা প্রতিষ্টানের মাত্র ৩৩ শতাংশ বালিকা এবং ৬০ শতাংশ বালক ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ পায়। এছাড়া পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩৭ শতাংশ বালিকা এবং ৬৪ শতাংশ বালক ইঞ্জিনিয়ারিংএ পড়ার যোগ্যতা অর্জন করে। পক্ষান্তরে সহ শিক্ষা থেকে মাত্র ১৬ শতাংশ বালিকা ও ৪৫ শতাংশ বালক এ যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। নার্সিং ও শিক্ষকতায় মেয়েদের অংগ্রহণ যথাক্রমে ৬০ শতাংশ ও ৪৮ শতাংশ এবং ছেলেদের অংশগ্রহণ ৩ শতাংশ ও ১৩ শতাংশ। সূত্র: জার্নাল অফ ইন্টারন্যাশনাল উইমেন্স স্টাডিজ, যুক্তরাষ্ট্র
পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের তুলনা সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অনেক পিছিয়ে পড়ার পেছনে ইন্টারন্যাশনাল উইমেন্স স্টাডিজের জার্নালের গবেষনায় অনেকগুলো কারণ বেরিয়ে এসেছে। এতে দেখা যায় সহশিক্ষার ক্ষেত্রে মেয়েরা ছেলে বন্ধু কিংবা শিক্ষকদের দ্বারা অনেকভাবে নির্যাতিত হওয়ার পাশাপাশি ছেলে মেয়েরা একে অপরের দ্বারা আকৃষ্ট হয় কিংবা হওয়ার পিছনে অনেক চিন্তা, সময় ও অর্থ ব্যয় করে ফলে তাদের একাডেমিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্যদিকে পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশুনা ও অন্যান্য ব্যাপারে অধিক মনোযোগী হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপ ও আমেরিকাতে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। অনেকটা অবাধ স্বাধীনতা ও নানাবিধ কারণে পশ্চিমা বিশ্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে শিক্ষার্থীদের ফলাফল দিনদিন খারাপের দিকে যাচ্ছিল। বিশেষ করে প্রচলিত সহশিক্ষার ফলে ছেলে মেয়েদের সহাবস্থান ও অবাধ মিশ্রনের সুবাদে একদিকে যেমন নারী নির্যাতন, অপ্রাপ্ত বয়সে গর্ভধারণ, লিভটুগেদার, যৌনব্যাধির সংখ্যা প্রভৃতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছিল, অন্যদিকে তাদের একাডেমিক ফলাফলও অনেক নিম্নগামী হচ্ছিল। এই প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা নীতিনির্ধারক ও অভিভাবকেরা ছেলে-মেয়ের পড়াশুনার জন্য পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে ঝুঁকতে থাকে। বর্তমানে অধিকাংশ অভিভাবক সন্তানদেরকে পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে অনেকটাই প্রতিযোগিতা করে থাকেন। কারণ এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফলাফলসহ বিভিন্ন দিক থেকে ছেলেমেয়েদের সম্মিলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অনেক এগিয়ে। ১৯৫৮ আমেরিকায় উচ্চ বিদ্যালয় (সহশিক্ষা) এর অধ্যক্ষদের মধ্যে একটি সমীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়েছিল আপনার ছাত্র-ছাত্রীদের প্রধান সমস্যাগুলি কি? উত্তর ছিল * বাড়িতে যা কাজ করতে দেওয়া হয় তা না করা। * জিনিসপত্রের প্রতি মমতা নেই যেমন-বই ছুঁড়ে ফেলে। * ঘরের আলো জ্বেলে রাখে,দরজা জানালা খোলে রাখে।* ঘরে থুথু ফেলে । * ঘরের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করে।৩০ বছর (এক প্রজন্ম) পরে ১৯৮৮ সালে এই সমীক্ষায় একই প্রশ্ন করা হলে উত্তরগুলি আশ্চযজনক ভাবে ভিন্ন। বতমানে সমস্যাগুলো হলো:* গভপাত* এইডস* ধষণ* সমকাম* মাদকাসক্তি * হিংসাত্মক আতংক, হত্যা, বন্দুক আর বিদ্যালয়ের মধ্যে ছোরা ছুরির অবাধ চলাচল। ড: কিনজের এক গবেষনায় দেখা যায় আমেরিকার উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শতকরা ৮৪ জন,কলেজের শতকরা ৬৭ জন অবাধ যৌনাচারে লিপ্ত হয়। গত ২০১০ সালে ১৮ জুন যুক্তরাষ্ট্রের টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্লুচেস্টার হাইস্কুলে গ্রীষ্মের বন্ধে ১৭ জন বালিকা গর্ভধারণ করেছে এবং এর আগের বছর স্কুলে মোট ১ হাজার ২০০ বালিকা গর্ভধারণ করে। এ ছাড়া এপি পরিবেশিত এক খবরে বলা হয়, ওহিও রাজ্যে টিমকিন সিনিয়র হাইস্কুলে ১৩ শতাংশ ছাত্রী গর্ভবতী হয়। উপরের আলোচনায় ফুটে উঠেছে সহশিক্ষার ভয়াবহতার করুণ চিত্র।এরই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে সহশিক্ষা ও সিঙ্গেল সেক্স এডুকেশনের মধ্যে পযাÐলোচনা করলে দেখা যায় সিঙ্গেল সেক্স এডুকেশনের সাফল্যেই বেশি।ছেলে ও মেয়ে আলাদা¬ এমন স্কুলগুলো সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ঈর্ষনীয় ভালো ফল করছে। ২০০৯ সালে এসএসসি পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, সারাদেশে সেরা ২০০টি স্কুলের মধ্যে মাত্র ৩৯টি স্কুলে সহশিক্ষাব্যবস্থা আছে। বাকি ১৬১টি স্কুল হয় বালক বা বালিকা বিদ্যালয় অথবা ছেলে ও মেয়েদের পৃথক শিফট রয়েছে।
২০০৭ ঢাকা বোর্ডে সেরা ৫ কলেজের মধ্যে ৫ টিই ছেলে-মেয়ে পৃথক শিক্ষাপদ্ধতি চালু রয়েছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ২৫৪ জন পরীক্ষার্থী।ঢাকা বোর্ডে শীর্ষ স্থান অধিকার করেছে নটরডেম কলেজ। এ কলেজে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২ হাজার ১৬৫ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ২ হাজার১৩৫ জন। পাসের শতকরা হার ৯৮.৬১ ভাগ। এ কলেজ থেকে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮২৫ জন। দ্বিতীয় স্থানে ভিকারুননিসা নূন কলেজ। ভিকারুননিসায় এবার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ হাজার ১৩৪ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১ হাজার ১২১ জন। পাসের হার ৯৮.৮৫ ভাগ। এ কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৯৩ পরীক্ষার্থী। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ঢাকা সিটি কলেজ। এ প্রতিষ্ঠান থেতে এবার পরীা দিয়েছে ২ হাজার ৯ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ১ হাজার ৯৮৪ জন। পাসের হার ৯৮.৭৬ ভাগ। সিটি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে৩৪৮ পরীক্ষার্থী।চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানের মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৯৪০ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৯৩৩ জন। পাসের শতকরা হার ৯৯.২৬ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৭৬ পরীক্ষার্থী। ৫ম স্থানে রয়েছে হলিক্রস কলেজ। এ প্রতিষ্ঠান থেকে এবার পরীক্ষা দিয়েছিল ৭৩০ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ৭২৭ জন। পাসের হার ৯৯.৫৯ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৩৯ জন। ঢাকা বোর্ডের মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় ফলাফলের দিক থেকে এগিয়ে থাকা ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭টিই সিঙ্গেল সেক্স শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ৮ বোর্ডের ফলাফল বিশ্লেষণেও দেখা প্রায় ৮০% শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই পৃথক তথা সিঙ্গেল সেক্স শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন বোর্ডের সেরা ২০স্কুল স্কুলের মধ্যেও ১৭ টি সিঙ্গেল সেক্স শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
২০১১ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলে ১০ বোর্ডের মধ্যে সেরা ১০ কলেজের নয়টিই সহশিক্ষাবিহীন। ফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, শীর্ষ ১০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ঢাকার তিনটির পাশাপাশি সমান সংখ্যক প্রতিষ্ঠান রয়েছে রাজশাহীর। কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম ও দিনাজপুরের রয়েছে একটি করে প্রতিষ্ঠান।
দেশ সেরা দশের তালিকা:
দেশের আটটি সাধারণ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের গ্রেড পয়েন্টের ভিত্তিতে ১০ বোর্ডের ২০টি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
১. রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ- ৯৪ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট
২. রংপুর ক্যাডেট কলেজ- পয়েন্ট ৯১
৩. পাবনা ক্যাডেট কলেজ ৯০ পয়েন্ট
৪. ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজ- ৮৯ দশমিক ৮০পয়েন্ট
৫. ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ – ৮৯ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট
৬. রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ- ৮৯ দশমিক ২৭ পয়েন্ট
৭. ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ- ৮৯ দশমিক ১৮ পয়েন্ট
৮. জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজ- ৮৮ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট
৯. মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ- ৮৮ দশমিক ৭২ পয়েন্ট এবং
১০. ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ- ৮৮ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট
উপরিউক্ত ১০টি কলেজের মধ্যে কেবল রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে সহশিক্ষা বিদ্যমান।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রোকেয়া আক্তার বেগম বলেন, আমি সহশিক্ষা সমর্থন করি না। এটি ছেলেমেয়েদের জন্য খারাপ পরিণতি ডেকে আনছে। তাছাড়া মোবাইল ও টেলিভিশন সংস্কৃতি তাদের পরস্পরের প্রতি উৎসাহিত করছে এবং এর ফলে তারা লেখাপড়ায় অমনোযোগী হচ্ছে। দেশে শিক্ষার ক্ষেত্রে আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ব্যাপারে স্বঘোষিত কিছু সুশীল ও নারীবাদীরা খোঁড়া আপত্তি জানালেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছেলে-মেয়েদের পৃথক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহ ঈর্ষণীয় সফলতা অর্জন করছে। তাই পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে কিছু মুখস্ত কথা ও হীনমন্যতা বোধ না করে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে যোগ্য করে গড়ে তোলে দেশকে বিশ্ব দরবারে টিকে থাকতে হলে বাস্তবতা উপলব্ধি করে নিজেদের আর্থ সামাজিক ও নিজস্ব মূল্যবোধের আলোকে শিক্ষা পদ্ধতিকে ঢেলে সাজাতে হবে।তাই উপরের পর্যালোচনা বর্ণনা আর এ ব্যাপারে হেফাজতে ইসলামের দাবীকে গ্রহণ করে দেশে পৃথক পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পদ্ধতি চালু করে ভবিষ্যত প্রজন্ম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহবান জানায়। কারণ যে পশ্চিমাদের অনুসরনে আমরা চলতে চাই তারা নিজেরাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দিক পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ব্যাপারে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট মহলের যত তাড়াতড়ি শুভ বুদ্ধির উদয় হবে ততই মঙ্গল।