ঢাকাবুধবার , ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  1. সর্বশেষ

বাবা দিবসে বাবার স্মরণে।

প্রতিবেদক
admin
২১ জুন ২০২০, ৭:১৬ অপরাহ্ণ

Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

পৃথিবীতে যাদের বাবা নেই,তারা বুঝে বাবার অভাব কি!বাবা নেই মাথার উপর ছায়া নেই আজ থেকে দুই বছর।বাবা ছাড়া প্রতিটা মুহূর্ত যেন হাহাকার মরুভূমি! প্রতিটা সেকেন্ড আজও বুঝতে পারি বাবা তোমার অভাব!
………….
আমার বাবা ছিল আমার আইডল।বাবা আমার প্রথম সুপার হিরো।যেন এক বটবৃক্ষের নাম!আমাদের ভাল রাখার জন্য তিনি সারাজীবন কষ্ট করে গেছেন।তবুও কখনও আমাদের কে বুঝতে দেননি।বাবা শব্দটি মনে হলে জেগে ওঠে পরম ভরসার ছবি।বাবার ছোট ছোট কথা গুলো আজও আমার চোখের সামনে ভাসে বাবাকে ঘিরে ছিল কত ভালবাসা,শ্রদ্ধা ভয় অভিমান। জীবনে চলার পথে কত ভুল করেছি তবুও একবারও বলা হয়নি বাবা ক্ষমা করে দিও। অনুভূতিও অব্যক্ত কথা আজও আমাকে কাদায়।মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান কখনও চিৎকার করে বলতে পারিনি বাবা তোমাকে ভালবাসি।নীরবে নীরবে বলে গেছি।

খুব ছোট বেলায় বাবা বাজার থেকে মিষ্টি কিনে আনতো,আমি ঘুমিয়ে গেলে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলতো, মিষ্টি খাওয়ার পর ঘুমিয়ে যেতাম আবার।বড় মাছের মাথা আমার ভাতের প্লেটে আব্বা আগে দিত!বাড়ির পাশে আরবী পড়ার জন্য প্রতিদিন সকালে ডেকে দিত।
ছোট বেলার একটা কথা মনে পড়লে আজও দুচোখে পানি চলে আসে!আমি খুবই অসুস্থ ছিলাম।সারারাত পাশে জেগে ছিল বাবা মা।হঠাৎ মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে গেল তবুও দেখি বাবা পাশেই জেগে।
একটুপর দেখি বাবা মা দুইজনেই কান্না করছে!

মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সমস্যা কম বেশি থাকে!কিন্তু বাবা কখনও বুঝতে দেন নি।স্কুল কলেজ বাড়ির পাশেই ছিল। বাবা সব সময় সাহস দিতেন যেন ভাল করে পড়াশোনা করি।তিনি সবসময় আমাকে ধৈর্য ধারণ করতে বলতেন।এইচ এস সি পাশ করার পর বাবার স্বপ্ন ছিল যেন আমি দেশসেরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি!আমি আমার মেধা,সততা, পরিশ্রম দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে থাকি।আর দুইহাত তুলে মহান আল্লাহ তা’আলার কাছে প্রার্থনা করতাম।।ঢাবির খ ইউনিটের পরিক্ষা দিলাম।দুইদিন পর রেজাল্ট দিল, চ্যান্স হলো না,তখন শুধু বাবার কথা মনে পড়তে ছিল যে এত কষ্ট করে পড়ালেখা করালো কিন্তু বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারলাম না, চান্স হলো না। আমি বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে বলতে পারিনি, বাবা আমার চ্যান্স হয়নি!পরে ৫ দিন পর বাবা ফোন দিয়ে বলছে বাবা তোমাদের সাথে যারা পড়তো অমুকের ছেলের তো চান্স হয়ে গেছে, তোমার রেজাল্টের কি খবর এই কথা শুনে আমার চোখ দিয়ে অঝোরে কান্না ঝরে গেল। তখন আমাকে সান্ত্বনা দিতে লাগলো, ভালো করে পড়াশোনা করে ইনশাআল্লাহ যেন কোন এক জায়গায় চান্স পাই এই ভরসা দিতে লাগলো!
দীর্ঘ একমাস ঢাকাতে থাকলাম জাবিতে পরীক্ষা হল ১২ সেপ্টেম্বর ৮ ঘন্টা পর রেজাল্ট দিল তখন আলহামদুলিল্লাহ ভাল পজিশন নিয়ে উত্তীর্ণ হলাম এত আনন্দ বলে প্রকাশ করতে পারবোনা! প্রথম ফোন বাবাকে দিলাম, বাবা শুনে তো সেই খুশি তারপর আমার জন্য,দোয়া করতে লাগলো!তারপর বাড়িতে আসলাম বাবা- মা দুইজনেই সেই খুশি।
আমার বাবার স্বপ্ন ছিল যে ভাল করে পড়শোনা করে বাংলাদেশ পুলিশে জব করি।সততা,মেধা পরিশ্রম দিয়ে যেন মানুষের কল্যাণের জন্য এবং দেশের জন্য কিছু করতে পারি।জানিনা বাবার অপূর্ণ স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো কি না!
আমার বাবা এখন শুধুই স্মৃতি!
বাবা নেই! বাবা নেই! দেখতে দেখতে দুই বছর।মাথার উপর থেকে আকাশ টা সরে গেছে আজ দুই বছর! বাবাকে আজ খুবই মিস করছি। বাবা প্রতিটা সেকেন্ড তোমার অনুপস্থিতি বুঝতে পেরেছি।
তিনি আমাদের মাঝে নেই আছে শুধু বাবার স্মৃতিগুলো।
এই তো সেই দিনের কথা ৮ মে ২০১৮, আমি তখন ক্যাম্পাসে ছিলাম হঠাৎ বাবার ফোন, দুপুরে খাওয়া দাওয়া করছো! আমি জ্বি আব্বা! বাবাঃশোন কখনও টেনশন করবা নাহ্, দুপুরে যদি মাছ দিয়ে ভাত খাও, রাতে মাংস দিয়ে খাবা! অচেনা জায়গা নাহলে শরীর অসুস্থ হয়ে যাবে!আমিঃ আচ্ছা আব্বু আপনি টেনশন করবেন নাহ আমার জন্য দোয়া করবেন!আর ২ টা টিউটোরিয়াল এক্সাম দিয়েই রমজানের আগে বাসাতে চলে যাব!১৪ তারিখের দিকে আম্মুর ফোন যে তোমার আব্বু তো হালকায় অসুস্থ দ্রুত বাসাতে চলে আছিস।আমার এক্সাম ছিল এক্সাম শেষ করে বাসাতে চলে আসলাম। এসে দেখি আব্বু বিছানা তে শুয়ে আছে!ছোট কাকা রাজশাহী থেকে ফোন করলো, পরের দিনই বাবাকে নিয়ে রওনা হলাম! পথে যেতে যেতে কত কথা বললে বাবা মনে পড়লে আজও যেন বুকের ভিতর যেন কাঁপুনি দেয়!বুকের মধ্যে অব্যক্ত কান্না রুখে দেই জাগতিক লৌকিকতায় !১৮ তারিখে বাবা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কেবিনে শুয়ে যখন বাবার মাথায় হাত দিতে ছিলাম তখন ছোট বেলার স্মৃতি বারবার মনে পড়লো,ছোট বেলায় যখন অসুস্থ হয়ে যেতাম বাবা ঠিকই এমনি ভাবে আমার পাশে বসে থাকতো!
মনে পড়ে দুই বছর আগের কথা! ২১ শে মে ২০১৮, অনুমানিক সকাল ৮ টায় যখন বাবা পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন।শেষ বার এত ডাকলাম আব্বু আব্বু করে। তাও সাঁড়া দিলো নাহ।তবুও বিশ্বাস ছিল মনে হয় বাবা বেঁচে আছেন।
অক্সিজেন মাস্কটা মুখে নিয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে।ডাক্তার কে ডাকলাম বললাম ভাই আর কি ঔষধ আনতে হবে বলেন। ডাক্তারের ও চোখে পানি চলে আসলো!আর শান্তনা দিতে লাগলো।বলল “তোমার বাবা ঘুমিয়েছে কিছু হয় নি”।আমার আঙ্কেল এর ডিউটি ছিল রাজশাহী মেট্টোপলিটনে ।আঙ্কেল কে ফোন দিলাম” আংকেল আব্বা যেন আর ঘুম থেকে উঠছে নাহ।”হঠাৎ চাচার কান্নার আওয়াজ শুনলাম।এদিকে বড় ভাই, আম্মু ও কাঁদছে।তখন বুঝলাম! মনে হয় আব্বু আর বেঁচে নেই! আম্মুর কান্না দেখে মনে হলো আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমার চাচা চলে আসলো মেডিকেলে আর শান্তনা দিতে লাগলো।পৃথিবীতে বাবা না থাকা কতটা কষ্টের সেই দিন থেকে আজও বুঝতে পারছি। চোখের সামনে এত তাড়াতাড়ি বাবা পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন!
নীরবে মাঝে মাঝে কান্না করি আবার ধৈর্য ধারণ করি।সব সময় চেস্টা করি হাসি মুখে থাকা।
বাবা না থাকলে পৃথিবীতে সংগ্রাম করে চলতে হয়।খুব ই মিস করছি বাবা তোমাকে। দোয়া করি “রব্বির হামহুমা কামা রব্বাঈয়ানী ছগিরা”
হে আল্লাহ তুমি আমার বাবাকে জান্নাতবাসী করুন।

প্রার্থনা করি যেন পৃথিবীর সকল বাবা ভালো থাকেন।
ভালো থেকো বাবা!

আরও পড়ুন

মাদারীপুর বাবু চৌধুরী ক্লিনিকের ওয়াশরুমে নবজাতক মেয়ে শিশুর জন্ম দিয়ে পালিয়ে গেলেন অজ্ঞাত মা

হাসপাতালে বেগম খালেদা জিয়াকে দেখার পর কি বললেন জামায়াত আমীর?

বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় কাপাসিয়া প্রেসক্লাবে বিশেষ দোয়া মাহফিল

কাপাসিয়ায় গাছ কেটে অবৈধভাবে কয়লা তৈরি করার দু’টি চুল্লী ধ্বংস করেছে উপজেলা প্রশাসন

রাউজানের ডাবুয়ায় খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্যে খতমে কুরআন ও দো’য়া মাহ’ফিল

বাঁচতে চায় ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত কুবি শিক্ষার্থী অনন্যা

২০২৪-২৫ সেশনের ক্লাস শুরু এবং ৫ দফা দাবি ইডেন শিক্ষার্থীদের

কুবি’র বিজয়-২৪ হলে কালচারাল এন্ড স্পোর্টস উইকের উদ্বোধন

চকরিয়ায় স্বামীর নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ

দোয়ারাবাজারে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি

বেগম জিয়া দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের প্রজ্ঞাপন

বেগম জিয়া দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের প্রজ্ঞাপন

১১ পেজ ও আইডির বিরুদ্ধে ডিবি কার্যালয়ে মামলা করলেন সাদিক কায়েম