সোহাগ মনি,সাফায়েত সিফাত, কুবি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরাণী হল। হলের গেইট সংলগ্ন রাস্তাটি মনে হবে যেন কোনো গাড়ি পার্কিং এর জায়গা কিংবা গ্যারেজ। এখানে লম্বা সারিতে পার্কিং হচ্ছে ট্রাক সহ ভারী যানবাহন। এছাড়াও দীর্ঘ দিনের পুরোনো যানবাহন ও পড়ে আছে হলের প্রধান ফটক সংলগ্ন এ রাস্তাটিতে। সরেজমিনে দেখা যায়, ফুটপাত পেরিয়ে মূল সড়কেও জায়গা দখল করে আছে এই পার্কিং ব্যবস্থা।
ফয়জুন্নেসা হলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য তিনটি হলের শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য এটি প্রধান সড়ক। প্রতিনিয়ত অন্যান্য পরিবহনের চলাচলের রাস্তা এটি। ভারী যানবাহনের অবৈধ পার্কিং এর ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। একদিকে রাস্তা দখল, অন্যদিকে গাড়ির বেপরোয়া গতি শিক্ষার্থীদের ফেলছে দুর্বিপাকে। দেয়াল ঘেঁষে দিনরাত গাড়ি রাখার কারণে দুর্বৃত্তদের দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশের সুযোগও তৈরি হচ্ছে। অপরদিকে গাড়ির আড়ালে দাড়িয়ে কখনো কখনো প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতেও দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও এসব ট্রাক পার্কিং এর ফলে নিচে তৈরি হচ্ছে ময়লার স্তূপ। প্রতিনিয়ত জমতে থাকা ময়লা সরানোরও নেই কোনো ব্যবস্থা। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন নবাব ফয়জুন্নেসা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রিমা জাহান বলেন, “আমাদের চলা-ফেরার খুব কষ্ট হয়, বিশেষ করে সন্ধ্যার পরে এই রাস্তা দিয়ে বের হতেই ভয় হয়, প্রশাসনের এ দিকটাতে দৃষ্টি দেয়া জরুরী।”
দীর্ঘদিনের এমন অব্যবস্থাপনার বিষয়ে বিষয়ে ফয়জুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ মো:সাদেকুজ্জামানের সাথে হলের চারপাশের পরিবেশ বিনষ্ট এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় অবৈধ পার্কিং সমস্যার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি হল কর্তৃপক্ষের সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে বলেন- “বিষয়টি আসলেই দৃষ্টিকটু। তবে হল প্রশাসনের একার পক্ষে কথা বলে এর সমাধান সম্ভব নয়। আমরা হলের অভ্যন্তরীন পরিবেশগত সমস্যা যেভাবে সামলাতে পারি, এটা সেভাবে করা যাবে না। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলবো। আমাদের পক্ষ থেকে সমস্যাটা দূর করার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোঃ সাদেক হোসেন মজুমদার সূত্রে জানা যায় রাস্তা বেদখল করে রাখা গাড়িগুলোর অধিকাংশই স্থানীয় ঠিকাদার মোঃ জনি মিয়ার মালিকানাধীন জনি এন্টারপ্রাইজ নামক নির্মাণ সামগ্রী বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের।
এদিকে বিষয়টি সমাধানে প্রশাসনের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে কুবি রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোঃ আবু তাহেরের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি নিরাপত্তা কর্মকর্তার মাধ্যমে মোঃ জনি মিয়ার সাথে যোগাযোগ করে বলেন- “জনি মিয়া সেগুলো সরিয়ে নিতে আরও কিছুদিন সময় চেয়েছে। বেদখলের কাজগুলো যারা করে, তাদের আগেও সতর্ক করা হয়েছিল। বারবার সতর্ক করার পরও প্রতিবার দু’তিনদিন পর একই কাজ করে যাচ্ছে।”
বারবার সাবধান করার পরও যেহেতু স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না, সেহেতু প্রশাসন অন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবছে কিনা জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার বলেন- “এভাবে সমাধান না হলে প্রয়োজনে আমরা এলাকার কমিশনার বা সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিবো। ছাত্রী হলের দেয়াল ঘেঁষে এমন বেদখল কর্মকান্ড ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত করে।”