ঢাকামঙ্গলবার , ৫ নভেম্বর ২০২৪
  1. সর্বশেষ

ড্রাগ আগ্রাস‌নের কব‌লে তরুণ প্রজন্ম (দ্বিতীয় পর্ব)

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
২৭ জুন ২০২৪, ১২:২৬ অপরাহ্ণ

Link Copied!

# মাদকের ভয়ংকর থাবায় নাস্তানাবুদ নতুন প্রজন্ম:
শহর থেকে গ্রামাঞ্চল-সর্বত্রই নেশা এখন হাতের নাগালে। এক যুগে এর বিস্তার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে বিভিন্ন সংস্থা অন্তত ১৫ হাজার কোটি টাকার মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে। তবে এই পরিমাণ দেশে ছড়িয়ে পড়া মোটের তুলনায় কোনোভাবেই ২০-২৫ শতাংশের বেশি নয় বলে মনে করছেন এ নিয়ে কাজ করা ব্যক্তি ও সংগঠনগুলো।

তারা বলছেন, বর্তমানে সারা দেশে সেবনকারীরা প্রতিদিন গড়ে ৪০ কোটি টাকার নেশা গ্রহণ করছে। বছরের হিসাবে এর পেছনে খরচ হয় আনুমানিক ১৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এ ব্যবসায় জড়িত ৬০০ গডফাদার ও বিক্রির নেটওয়ার্কে কাজ করে ২ লাখ ৬৫ হাজার জন। প্রতিবছরই বাড়ছে এই সংখ্যা।
মাদকদ্রব্য লেনদেনের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে বিদেশে। নেশাজাতীয় দ্রব্যের বিস্তারের এই সর্বনাশা চিত্র যেভাবে আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতি করছে, সেভাবে একটি প্রজন্মের চিন্তার জগতে বন্ধ্যত্ব সৃষ্টি করছে। দীর্ঘ মেয়াদে এর ফল ভয়াবহ হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

# লাগামহীন মাদকের বিস্তার:
৫ সংস্থার ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৮২ মামলায় ১০ লাখ ১০ হাজার ৭১৮ জন আসামি * মাদক কেনাবেচা ও সেবনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হচ্ছে ভয়ংক অপরাধ * উদ্ধার হয় সামান্য, বেশিরভাগই ধরাছোঁয়ার বাইরে।

মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানতে পাঁচটি সংস্থার ১২ বছরের (২০০৯-২০২০) উদ্ধারকৃত মাদকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে যুগান্তর। সংস্থাগুলো হলো-মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। এ পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া ২৫ ধরনের উল্লেখযোগ্য মাদকের মধ্যে এই পাঁচ সংস্থা সবচেয়ে বেশি উদ্ধার করে ৯ ধরনের মাদক। এগুলো হলো-ইয়াবা, হেরোইন, কোকেন, আফিম, গাঁজা, ফেনসিডিল, বিদেশি মদ, বিয়ার ও ইঞ্জেকটিং ড্রাগ।

১২ বছরে কেবল এই নয়টি মাদক যে পরিমাণে উদ্ধার হয়েছে, প্রচলিত দাম অনুযায়ী টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ দাঁড়ায় আনুমানিক ১৪ হাজার ৩১৩ কোটি ৭৯ লাখ ৬২ হাজার ১৩০ টাকা। পাঁচ সংস্থার মাদক উদ্ধারের ঘটনায় এক যুগে ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৮২টি মামলা হয়।

সর্বোচ্চ মামলা হয় ২০১৯ সালে ১ লাখ ২৪ হাজার ৯৮টি এবং সর্বনিম্ন হয় ২০০৯ সালে ২৭ হাজার ৪৪১টি। মোট মামলায় আসামি করা হয় ১০ লাখ ১০ হাজার ৭১৮ জনকে। ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৬২ হাজার ৮৪৭ জন আসামি হন এবং ২০০৯ সালে সর্বনিম্ন ৩৪ হাজার ৩১৫ জন আসামি হন।

# ভয়ংকর ড্রাগ ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’:
এই ড্রাগ যার ওপর প্রয়োগ করা হয় তার নিজের কোনো নিয়ন্ত্রণ তার থাকে না। বলা হয়ে থাকে, মাদকের শিকার ওই ব্যক্তি তার নিয়ন্ত্রণকারীর কথা মতো সবকিছুই করতে পারেন। তার সব জিনিসপত্র দিয়ে দিতে পারেন এমনকি দুর্বৃত্তদের কথা মতো কাউকে খুন পর্যন্ত করতে পারেন।

এই ড্রাগের নাম স্কোপোলামিন। এক ধরনের নাইটশেড উদ্ভিদ থেকে তৈরি হয়। স্কোপোলামিন হায়োসিন নামেও পরিচিত। এটি প্রাকৃতিক বা কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত ট্রপেন অ্যালকালয়েড এবং অ্যান্টিকোলিনার্জিক ড্রাগ যা কয়েক ধরনের রোগ ও অসুস্থতা যেমন-মোশন সিকনেস, অপারেশন পরবর্তী বমি বমি ভাব এবং পার্কিনসন রোগের কাঁপুনির চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

স্কোপোলামিনকে ধরা হয় প্রথম ‘ট্রুথ সেরাম’ বা সত্য বলানোর ওষুধগুলোর একটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিপক্ষের কাছ থেকে তথ্য বের করতে এর ব্যবহারের নজির পাওয়া যায়। এর অন্ধকার দিকগুলোর কারণেই এটি পরিচিত।

পোশাকি নাম স্কোপোলামিন হলেও সাধারণের কাছে এটি পরিচিত ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামে। আর পুরো বিশ্বে এটি ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক ড্রাগ’ হিসেবে স্বীকৃত।

অপরাধীরা, বিশেষ করে কলম্বিয়া এবং ইকুয়েডরে লুট, ধর্ষণ কিংবা হত্যা করার মতো জঘন্য সব অপরাধ ঘটনাতে এর ব্যবহার করেছে।

আর আমাদের জন্য ভয়ংকর বিষয় হলো, এই ড্রাগ বাংলাদেশের অপরাধীদের হাতে এসে পৌঁছেছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক ডা. দুলাল কৃষ্ণ সাহা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, স্কোপোলামাইন ধুতরার গাছ থেকে তৈরি হয়। এই ড্রাগ পাউডারের মতো অবস্থায় ডেভিল’স ব্রিদ বা শয়তানের নিঃশ্বাস নামে পরিচিত। এটি কারো ওপর প্রয়োগ করা হলে ভিকটিম তার নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং অপরাধীদের কথা মতো তার সবকিছু দিয়ে দেয়।

ভিজিটিং কার্ড, কাগজ, কাপড় কিংবা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে এই ড্রাগ রেখে যার ওপর ওপর প্রয়োগ করা হবে তার নাকের চার থেকে ছয় ইঞ্চি দূরত্বে নিয়ে আসা হয়।

দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, এটি নিঃশ্বাস নেওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে কার্যকর হয় এবং ভুক্তভোগীর মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে না। কারও কারও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে এক ঘণ্টা সময় লাগে, আবার অনেকে তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঢাকা, যশোর, খুলনা, রাজবাড়ী ও বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্কোপোলামিন ব্যবহার করে ডাকাতির ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।

নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে একটি চক্রের কাছ থেকে প্রথম ১০ গ্রাম স্কোপোলামিন উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ থানা পুলিশ।

চক্রটি অনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে স্কোপোলামাইন, পটাশিয়াম সায়ানাইড ও ক্লোরোফর্ম বিক্রি করত।
চল‌বে……..
ছানাউল্লাহ
সাংবা‌দিক ও কলা‌মিস্ট

134 Views

আরও পড়ুন

বুক রিভিউ:সময়ের ছবি ‘নীরব কোলাহল’

মৌলভীবাজারে সোনার বাংলা আদর্শ ক্লাবের ৬ষ্ঠ মেধা যাচাই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

হাওরের জনপদ এখন উচ্চশিক্ষায় আরো এগিয়ে যাবে–ড. মোঃ আবু নঈম শেখ

রাবিতে গ্রীন ভয়েস এর নেতৃত্বে মাহিন-সিরাজুল

ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় মনিরকে

নাইক্ষ্যংছড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার !!

আগামী দিনের রাজনীতি হবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়ার রাজনীতি: নাজমুল মোস্তফা আমিন

নাটোরে অস্ত্রসহ আওয়ামীলীগ নেতা ও তার সহযোগী আটক

দুর্লভ নিদর্শনে সমৃদ্ধ এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর

রাবিতে ছাত্র উপদেষ্টার আহবানে গাছ থেকে পেরেক অপসারণ

শান্তিগঞ্জে জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে র‍্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

শান্তিগঞ্জে কিশোর কন্ঠ মেধাবৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত