মোঃ আবু সঈদ, স্টাফ রিপোটারঃ
মরুকরণ প্রক্রিয়া ঠেকাতে সেডিমেন্ট ম্যানেজমেন্ট, প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে মৎস্য উৎপাদন, সবুজায়ন এবং কার্বন এমিশন কমাতে বৃক্ষরোপণ, সমাজে মানি ফ্রো তৈরিতে কমিউনিটি বেজড পর্যটন গড়ার লক্ষ্যে বিশ্ব জলাভূমি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক সুনামগঞ্জের হাওরে “হাওর সমাবেশ” অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার সকালে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়ন (কালনী নদীর পূর্বপাড়ের হাওরে) বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের আয়োজনে হাওর উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
হাওর অঞ্চল হিসেবে খ্যাত সুনামগঞ্জ,সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার কৃষক ও জেলে এবং পরিবেশবাদীরা অংশগ্রহণ করেন।
সভার শুরুতেই হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ হাওর উন্নয়ন বোর্ড গঠিত হয়। তবে ১৯৮২ সালে তদানীন্তন সরকারের এক আদেশে তা বিলুপ্ত হয়। পরবর্তীতে ২০০০ সালে বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড আবার গঠিত হয়। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২৪ জুলাই ২০১৬ ইং তারিখে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি অঞ্চলের জনগণের টেকসই জীবনমান উন্নয়ন এবং হাওর ও জলাভূমি অঞ্চলের জীববৈচিত্র সুরক্ষা, বন্যা ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের উন্নত জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করাই আমাদের কাজ।
কিশোরগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে কাজগুলো পরিচালিত হয়। তিনি আরও বলেন, সকল জলাভূমি সুরক্ষা, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার নিমিত্তে অনতিবিলম্বে পৃথক মন্ত্রণালয় তথা জলাভূমি মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করা, জলাভূমি সুরক্ষা, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন দ্রুত প্রণয়ন করা, বাংলাদেশের সকল বিল, হাওর-বাওড়, নালা ঝিলসহ সকল জলাভূমি চতুরপার্শ্বে সুরক্ষা বেষ্টনি দিয়ে পায়ে চলার পথ তৈরি করা হবে। সুনামগঞ্জের হাওর বিষয়ে তিনি বলেন, হাওর শুধু ধান উৎপাদনের জায়গা নয়, এখানে মাছের ভান্ডার রয়েছে। হাওরকেন্দ্রিক সামাজিক পর্যটন গড়ে তুলতে হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া’র সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের, আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাওর জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আক্তারুজ্জামান
এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান।
উৎসব উপলক্ষে উজানধল গ্রামে সকাল থেকে আসতে শুরু করেন দর্শনার্থীরা। সরকারি উৎসবে আগত অংশজনীরা জানিয়েছেন, বিগত সময়ে হাওরবাসীর উন্নয়নে সরকার নানা ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও তা হাওরের মানুষের উন্নযনে কাজে আসেনি। অপরিকল্পিত উন্নয়নে হাওরের পরিবেশ প্রতিবেশ নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। হাওরের জীববৈচিত্র, জলজপ্রাণী ও বসতী রক্ষায় সরকারি বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা। হাওরের টেকসই উন্নয়নে হাওরের জন্য আলাদা করে মন্ত্রনালয় করার দাবি উঠেছে এই উৎসবে।