এজি লাভলু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের ১০ম শ্রেণির ছাত্র নির্মলের বিরুদ্ধে এক শিশুকে (১০) ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার ওই শিশু কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। নির্যাতনের শিকার শিশুটির বাবা বাদী হয়ে অভিযুক্ত কিশোর নির্মলের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম সদর থানায় মামলা করেছেন। কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহফুজার রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত কিশোর পাঁচগাছী ইউনিয়নের শুলকুর বাজার সংলগ্ন উত্তর নওয়াবশ গ্রামের গাদু মিয়ার ছেলে। সে একই এলাকার পাঁচগাছী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র। এ ঘটনার পর থেকে নির্মল পলাতক রয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. নাসিমা বেগম বলেন, ‘শিশুর প্রাথমিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তবে কমিটির মাধ্যমে আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবো।
শিশুটির মা জানান, গত শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে কীর্তন গানের আয়োজন করা হয়। তিনি শিশুটিকে তার বাবার কাছে রেখে কীর্তন শুনতে যান। শিশুটি ঘুমিয়ে পড়লে তার বাবা বাইরে থেকে দরজার শেকল লাগিয়ে পাশের বাজারে যান। এ সুযোগে পাশের বাড়ির নির্মল ঘরে ঢুকে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। তিনি বাড়ি ফিরে মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় পান। পরে রাতেই তাকে নিয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানায় গেলে পুলিশ শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেয়।
ঘটনা ধামাচাপা দিতে এলাকার মেম্বারসহ প্রভাবশালী একটি মহল তৎপরতা শুরু করেছে জানিয়ে শিশুটির মা বলেন, ‘আমি চাই ওই ছেলের বিচার হোক। শুনেছি ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে এলাকায় নাকি ফয়সালার চেষ্টা চলছে। কিন্তু আমি ওই ছেলের শাস্তি চাই।’
মীমাংসার কথা জিজ্ঞাসা করলে পাঁচগাছী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘এতো ছোট শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় আমি কেন মীমাংসা করতে যাবো? আমি বরং ওই পরিবারকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে পাঁচগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দেলওয়ার হোসেন বলেন, ‘শুনছি দুই পরিবার নাকি এটা মীমাংসা করেছে। আমি এর বেশি কিছু জানি না।’
কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহফুজার রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত কিশোরকে ধরার চেষ্টা চলছে। শিশুটিকে আমরা কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পাঠিয়েছি। শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ওসি আরও বলেন, ‘হাসপাতালে শিশুটির ওপর আমাদের নিরাপত্তা নজরদারি রয়েছে। কেউ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হবে না। আমরা বিষয়টি নিয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছি। শিশুটি ও তার পরিবারকে আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।’