ধর্ষণকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে গ্রামবাসীর বিক্ষোভ
কাপাসিয়া(গাজীপুর) থেকে শামসুল হুদা লিটনঃ
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের নয়াসাঙ্গুন এলাকায় সম্প্রতি শিক্ষার্থীকে গভীর রাতে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের ঘটনায় ২৪ আগস্ট, মঙ্গলবার সকালে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং দ্রুত আসামি গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ চাঞ্চল্যকর ঘটনায় থানায় মামলা হলেও এখনো আসামিরা গ্রেফতার হয়নি।
সরজমিনে জানা যায়, ওই শিক্ষার্থী (১৩) স্থানীয় একটি মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। প্রবাস ফেরত বাবা স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। মা দশ বছর যাবত জর্ডানে থাকেন। দুই বছর বয়স থেকে দাদির সাথেই থাকতেন ওই শিক্ষার্থী।
স্থানীয় একাধিক নারী বলেন, মোক্তার খুব খারাপ প্রকৃতির লোক। সে ইতঃপূর্বে এলাকায় বিভিন্ন খারাপ কর্মকা- ঘটিয়েছে। মহিলাদের সাথে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সামান্য ঝগড়া লাগলেই নিজের পরনের লুঙ্গি খুলে ফেলত এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতো। তার ছেলেও খারাপ প্রকৃতির লোক।
মঙ্গলবার সকালে নয়াসাঙ্গুন এলাকার বেশ কিছু নারী-পুরুষ একত্র হয়ে গত ১৩ আগস্ট শুক্রবার রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনাটির তীব্র নিন্দা ও জোড়ালো প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ সময় প্রতিবেশী কাদির মাস্টারের ছেলে মোক্তার এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে তারা দাবি করেন।
নির্যাতিতা বলেন, তাকে গভীর রাতে ঘুম থেকে তুলে গলায় ছুরি ধরে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে বাড়ি থেকে কিছু দূর নিয়ে এক কাঁচা রাস্তার উপর কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়। কিশোরীর দেওয়া বর্ণনা অনুযায়ী প্রথম জন ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যক্তি দ্বারা ধর্ষিত হওয়ার কথা জানায়। এ সময় তার গলায় একজন দেশীয় অস্ত্র ধরে রাখে অপরজন চালায় নির্যাতন। বৃষ্টি ও অন্ধকার থাকায় কাউকেই চিনতে পারেনি ওই নির্যাতিত শিক্ষার্থী। তবে ধর্ষণ কারীদের মধ্যে একজন খুব মোটা খাটো, দ্বিতীয়জন মিডিয়াম মধ্যবয়সী ও তৃতীয়জন লম্বা চিকন শার্ট ও লুঙ্গিপড়া ছিলো বলে জানিয়েছে। শিক্ষার্থী দেওয়া জবানবন্দির সাথে থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগ কিছু গরমিল খোঁজে পাওয়া যায়।
নির্যাতিতার বাবা বলেন, পূর্বের শত্রুতার জেরে মোক্তার হোসেন গফুর আমার মেয়ের এই সর্বনাশ করেছে লোক দিয়ে। এর আগেও একাধিকবার মোক্তার তাদের সাথে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে নানা বিষয় নিয়ে বিরোধে জড়িয়েছেন বলে জানান তিনি। ঘটনার আগের দিন বৃহস্পতিবার বিকালে মোক্তার একটা কিছু করবে বলেও হুমকি দিয়েছিল।
এদিকে সন্দেহযুক্ত মোক্তার হোসেন গফুর ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। বাড়িতে গিয়ে মোক্তারকে না পেয়ে কথা হয় তার স্ত্রী সাথে।
তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এইসব মিথ্যা, বানোয়াট। আমার স্বামী এ বিষয়ে কিছুই জানেনা। তবে তার স্বামী যে পলাতক রয়েছে বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন তিনি।
নির্যাতিতার দাদি জানায়, আমি আমার নাতনি একসাথে টিনের ঘরে ঘুমাই। শুক্রবার রাত আনুমানিক ১টার দিকে টিনের বেড়া কেটে দরজা খুলে তিনজন লোক ঘরে আইয়া আমার গলায়, মাথার উপড়ে ছুড়ি ধরছে। কইছে চিৎকার চেঁচামেচি করলে মেরে ফেলবে। পরে কইছে আমার নাকের, কানের ও গলার অলংকার খুইল্লা দিতাম। পরে পরনের কাপড় দিয়া আমার হাত-পাঁ বেঁধে নাতনিরে বাহিরে নিয়ে যায় মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে। আশপাশে লোকজনসহ অনেক খোঁজাখুঁজির পর দেখি নাতনি ফজরের আযানের আধাঘণ্টা আগে বাড়ি আসছে।
এ ব্যাপারে কথা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কালিগঞ্জ সার্কেল) ফারজানা ইয়াসমিনের সাথে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, বাদী নিজেও স্পষ্ট না কেবা কারা এ কাজ করেছে। সে সন্দেহ জনক ভাবে যাদের নাম বলেছে আমরা তাদের মোবাইল সিভিয়ার নিয়ে কাজ করছি, এ বিষয়ে আশাকরি আমরা দ্রুত সফল হবো।