ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৮ মার্চ ২০২৪
  1. সর্বশেষ

আমি অবহেলিত, কারণ আমি শিক্ষার্থী!!

প্রতিবেদক
নিউজ এডিটর
৫ এপ্রিল ২০২১, ৯:৫৭ অপরাহ্ণ

Link Copied!

কাওসার আহমেদ: ঢাবি

আমার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা,আমি একজন শিক্ষার্থী। এদেশে যত অবহেলিত জনগোষ্ঠী আছে তাদের মধ্যে প্রথম সারিতেই আমরা, শিক্ষার্থীরা। আমি রাজনৈতিক বলির পাঁঠা, আমি সামাজিক বলির পাঁঠা,আমি পারিবারিক বলির পাঁঠা! সবাই ই আমাকে নিয়ে শুধু খেলা করে, সবার কাছেই আমি অবহেলিত। রাষ্ট্রের কাছে আমি তুচ্ছ,কারন আমি বোঝা। সমাজের কাছে আমি তুচ্ছ কারন আমি বেকার। পরিবারের কাছে আমি তুচ্ছ কারন আমি বোঝা। এদেশে যখন সবকিছু স্বাভাবিক চলে, তখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ মানে আমার হামাগুড়ি খেয়ে এগিয়ে চলা এই জীবনটাও বন্ধ! কোচিং বা টিউশন করে মাসে পাওয়া সামান্য কিছু টাকা দিয়েই আমি আর আমার মতো শিক্ষার্থীরা মুখে দুমোঠো খাবারের ব্যবস্থা করে। কারো আবার এই টিউশনির টাকায় জোটে অসুস্থ বাবা মায়ের ঔষধ, দরিদ্র বাবা মায়ের রুটি রুজি। আদরের ছোট ভাইটি মুখখানি মলিন করে যখন বলে, “ভাইয়া, কতদিন যাবৎ খাতা কলম কেনার টাকা দেন না, আমি কি পড়ালেখা করতে পারবো না ভাইয়া?” ,তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে শুধু দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলি। পুরাতন ভাঙ্গা মোবাইলটি দিয়ে অনলাইন ক্লাশ করতে খুব অসুবিধা। দুমোঠো খাবারের আর অসুস্থ বাবা মায়ের ঔষধ কেনার টাকার চিন্তা বাদ দিয়েই আমাকে চিন্তা করতে হয় এমবি কেনার টাকা কোথায় পাবো। এমন বিপদেও খোলা আকাশের নিচে গিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অনলাইনে পরীক্ষা দেই আমি! ক্লাশের অনেক মেয়েগুলোর তো বিয়েই হয়ে গেলো এমতাবস্থায়, ঝড়ে গেলো এক একটি তাজা তাজা মেধাবী ছাত্রী। অযোগ্য মূর্খ সংসারী ছেলেদের কাছে বিয়ে দিয়েই তো তাদের বাবা মা সরিয়ে দিলো পরিবারের বোঝা! রিমা নামের ক্লাশের সবচেয়ে মেধাবী মেয়েটি যে প্রতিটি পরীক্ষায়ই ফাস্ট হয়েছে, তারও বিয়ে হয়ে গেলো দোকানদার ছেলে ফিরোজের সাথে। রিমা তো সেদিন ফোন ধরেই হাউমাউ করে কেঁদে দিলো,” দোস্ত, অনেক স্বপ্ন ছিল রে, অনেক বড় হওয়ার ইচ্ছা ছিল, দেশের জন্য অনেক কিছু করার ইচ্ছা ছিল। বাবা মা আর পারছে না,তাই এই দোকানদার ছেলের কাছেই জোর করে বিয়ে দিয়ে দিলো। স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে গেলো, তোরা পারলে ভালো কিছু করিস।” রিমা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে, টিউশনি করে যে টাকা পেতো তা দিয়েই নিজের খরচ চলতো। কোনোমতে জীবনযাপন করেই প্রতিমাসে বাবা মাকেও কিছু টাকা দিতো। কিন্তু লকডাউনে সেই রিমা না পারছে পরিবারকে টাকা দিতে, না পারছে নিজের খরচ চালাতে। রিমা খুব প্রতিবাদী মেয়ে ছিল, আর বিভিন্ন অনুষ্ঠানেই কথা বলতো বাল্যবিবাহ, নারীর অধিকার ও নারীর অগ্রগতি নিয়ে। কিন্তু আজ নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাবা মায়ের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে সে, কারন আজ আর প্রতিবাদ করার কোনো ভাষা নেই। আজ সে অসহায় এক মেয়ে। এতদিন বুঝতে না পারলেও আজ সে বুঝতে পারছে যে সমাজের মেয়েরা কোনোরকম প্রতিবাদ ছাড়াই বাল্যবিবাহ আর অসম বিবাহ মেনে নেয় কেন। তাই আজ সেও নিয়তির নির্মমতা মেনে নিয়েছে। এমন অসংখ্য মেধাবী রিমা হারিয়ে গেছে আমাদের থেকে, শুধু এই লকডাউনে। মেয়েগুলো বোঝা হয়ে তো এক দোজখে থেকে অন্য দোজখে পতিত হলো। কিন্তু আমি? আমি শিক্ষার্থী,আমি অবহেলিত। অন্যদের মতো কাজ করলেও সমাজের কাছে আমি হাসিঠাট্টার পাত্র হই, কাজ না করলেও আমি অসহায় অবহেলিত রই। কাজ করলেও আমি অবহেলিত,কাজ না করলেও আমি অবহেলিত, কারন আমি ছাত্র। একদিকে যেমন সবধরনের কাজ করতেও পারি না নিজের ব্যক্তিত্ব রক্ষার্থে, অন্যদিকে সব কাজ পারিও না, জানা নেই বা করতে অভ্যস্ত নই। আমি উপরে ঠাট বজায় রেখে হদয় ব্যথিত এক চাপা কান্না কন্ঠস্বর। আমি গভীর রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে অশ্রুজলে বালিশ ভিজিয়ে ফেলা সেই মানুষটি। আমি চুপিচুপি চোখ গড়িয়ে গড়িয়ে বের হওয়া পানি মুছতে থাকা এক মানবেতর । আমি আগামী বাংলাদেশের কর্ণধার হওয়া সত্ত্বেও আমি আজ তুচ্ছ,আমি অবহেলিত, কারন আমি ছাত্র,আমি শিক্ষার্থী। আমি এই জাতি,দেশ,সমাজ আর পরিবারের বোঝা,কারন আমি শিক্ষার্থী। আমি অবহেলিত কারন আমি শিক্ষার্থী।

140 Views

আরও পড়ুন

মাইশা আক্তার নিশিলার কবিতা “আসক্ত মেঘকণ্যা”

বোয়ালখালীর ৬টি দুস্থ পরিবারে এম এ হাশেম ফাউন্ডেশনের ঘর হস্তান্তর

” আনজুমনে নওজোয়ান ” বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদরাসা শাখার অনুমোদন

শান্তিগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শান্তিগঞ্জে আওয়ামীলীগের র‍্যালি ও আলোচনা সভা

শান্তিগঞ্জ সাব রেজিষ্টার অফিসের উদ্দ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত

নাইক্ষ্যংছড়িতে অসহায়দের মাঝে ১১ বিজিবির ইফতার বিতরণ !!

কুতুবদিয়ায় ঘুর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্থ ছফুরা পেলেন নতুন ঘর

রাজশাহী নগরীতে শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন।

সড়ক দুর্ঘটনা

দোয়ারাবাজারে ট্রাক চাপায় শিশু নিহত

উদ্বোধন করলেন-সাংসদ সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম
চকরিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও ট্রমা সেন্টারের শুভ উদ্বোধন

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী